যশোরের সিঙ্গিয়া রেলস্টেশন থেকে খুলে নেওয়া ফ্যানসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ফের লাগিয়ে দিয়েছে রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা ওই সরঞ্জামাদি পুনঃস্থাপন করেন। এর আগে রেলওয়ের দুই বিভাগের ঠেলাঠেলিতে গত ২৬ জুলাই ওই ফ্যান খুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসানসহ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মাসেতু রেলপ্রকল্প চালু হওয়ার পর খুলনা থেকে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি সিঙ্গিয়া-পদ্মবিলা জংশন দিয়ে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করছে। ফলে সিঙ্গিয়া জংশনের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। পদ্মাসেতু সংযোগ প্রকল্পের আওতায় সিঙ্গিয়া স্টেশনে নতুন ভবনও নির্মাণ করা হয়েছে।

গত শনিবার (২৬ জুলাই) এই ভবন থেকে সব ফ্যানসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম খুলে নিয়ে যায় রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ। খুলে নেওয়া সরঞ্জামের মধ্যে ছিল, দু’টি যাত্রী বিশ্রামাগারের ৮টি ফ্যান, টিকিট কাউন্টারের ৩টি ফ্যান এবং স্টেশন মাস্টার ও সহকারী স্টেশন মাস্টারের কক্ষের ৪টি ফ্যান। এছাড়া ৫টি অ্যাডজাস্ট ফ্যানও খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং স্টেশন মাস্টারের কক্ষের এসির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ওইদিনই সিঙ্গিয়া রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান বিষয়টি পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আকারে জানান।
![]()
বিজ্ঞাপন
এই ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে তারা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেন। এরপর খুলে নেওয়া ফ্যানসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ফের প্রতিস্থাপন করা হয়। মঙ্গলবার ওই সরঞ্জামাদি পুনঃস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিঙ্গিয়া রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান জানান, রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে খুলে নেওয়া ফ্যানসহ সব সরঞ্জাম মঙ্গলবার লাগানো সম্পন্ন হয়েছে।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) জাকির হোসেন জানান, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি স্থাপনের পর তা স্টেশন মাস্টারকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু তিনি তা বুঝে না নেওয়ায় সেগুলো খুলে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সমস্যার সমাধান হয়েছে এবং ফ্যানসহ সব মালামাল ফের লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মূলত রেলওয়ের দুই বিভাগের ঠেলাঠেলির কারণে এই সংকটের সূত্রপাত হয়। রেলওয়ের মধ্যেই একাধিক বিভাগ রয়েছে। রেলওয়ের বিদ্যুতের সরঞ্জামাদি স্থাপন, মেরামত রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে বিদ্যুৎ বিভাগ। আবার এইসব কিছুর নিরাপত্তার দায়িত্ব রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর। কিন্তু সিঙ্গিয়া স্টেশনে এখনও জিআরপি ফাঁড়ি বা নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

অন্যদিকে, স্টেশন মাস্টার রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের অধীনে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে ফ্যানসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলো বুঝে নেওয়ার জন্য স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসানকে চাপ দেওয়া হয়। তার আওতাবহির্ভূত বিধায় তিনি এই সরঞ্জাম বুঝে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) জাকির হোসেন স্টেশনের সব ফ্যান খুলে নিয়ে যান।
পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন জানান, সংকটের সমাধান হয়েছে। রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে ফ্যানসহ অন্যান্য সরঞ্জাম পুনরায় লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিনিধি/এসএস

