রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ফরিদপুরে শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন ঘিরে রণক্ষেত্র, বাস চলাচল বন্ধ

জেলা প্রতিনিধি, ফরিদপুর
প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২৫, ০৯:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

ফরিদপুরে শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন ঘিরে রণক্ষেত্র, বাস চলাচল বন্ধ

ফরিদপুরে হামলা পাল্টা হামলায় রণক্ষেত্রে রূপ নেয় নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা। মোটর ওয়ার্কার্স শ্রমিক ইউনিয়নের (১০৫৫) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় সাধারণ শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।

সাধারণ শ্রমিকদের দাবি, বৈধভাবে সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।


বিজ্ঞাপন


মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের গোয়ালচামটস্থ পৌর বাস টার্মিনালে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স (১০৫৫) শ্রমিক ইউনিয়ন অবৈধভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে দখলের অভিযোগ এনে এবং কমিটি বাতিলের দাবিতে ‘সব শ্রমিকের ব্যানারে’ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

thumbnail_1000095764

মানববন্ধন শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে অপরপক্ষের দাবি করা নির্বাচিত সভাপতি ইয়াছিন মোল্যার (৪০) নেতৃত্বে অর্ধশত লোক লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এসময় তাদের ব্যানারও কেড়ে নেওয়া হয় এবং এলোপাতাড়িভাবে শ্রমিকদের পেটানো হয়।


বিজ্ঞাপন


হামলাকারীরা মানববন্ধনে থাকা শ্রমিকদের আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে শ্লোগানও দিতে দেখা যায়।

এ ঘটনার পর সাধারণ শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে দুপুর ১২টা থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তারাও লাঠিসোঁটা নিয়ে বাস টার্মিনালে অবস্থান নেন। পরে দুপুর ২টার দিকে দু’পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে রুপ নেয়। এসময় ইটপাটকেলও নিক্ষেপ করা হয়। আহত হয় অন্ততপক্ষে ১০ জন শ্রমিক। তাদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

thumbnail_1000095702

জানা যায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে বিরোধ চলে আসছে। এক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ করেন বর্তমান সভাপতি (বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত) ইয়াসিন মোল্লা ও অপর গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ করেন সাবেক সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেন লাভলু।

সাধারণ শ্রমিক ও সংগঠনটির সাবেক একাধিক নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শ্রমিক ইউনিয়নটিতে ৭ হাজার ২০০ জন সদস্য রয়েছেন। এরমধ্যে এক হাজার দু’জন শ্রমিককে সদস্য দেখিয়ে একপাক্ষিকভাবে ২৫ জুলাই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ না থাকায় গত ১৭ জুলাই সবাইকে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার।

আরও পড়ুন

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে ১৭টি মৃত্যুফাঁদ, ৬ মাসে শতাধিক দুর্ঘটনা

ইসমাইল হোসেন লাভলু অভিযোগ করে বলেন, আমাদের অধিকাংশ শ্রমিকদের না জানিয়ে গোপনে নির্বাচন করা হয়। কোনো তফশিল ঘোষণা না করে এবং ভোটার তালিকা না টানিয়েই অবৈধভাবে নির্বাচন দেখিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নটি দখল করা হয়। যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হলে সেখানেও ইয়াছিন মোল্যার নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এরপরে সাধারণ শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। আমরা সুষ্ঠু একটি নির্বাচনের দাবি জানাই এবং শ্রমিকদের ওপর হামলার বিচার চাই। যতক্ষণ সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস না পাব ততক্ষণ শ্রমিকরা বাস চালাবে না।

অপরদিকে ইয়াছিন মোল্যা মানববন্ধনকারীদের আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যায়িত করে বলেন, এই আওয়ামী লীগের দোসররা এখনও চাঁদাবাজি করছে। আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে, এই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে আজ এই অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আজ আওয়ামী লীগের দোসররা একত্রিত হয়েছিল, তখন আমরা সাধারণ শ্রমিকরা বাধা দিয়েছি।

thumbnail_1000095715

এদিকে শ্রমিকদের দ্বন্দ্বে বাস চলাচল বন্ধ করায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। যাত্রীদের ফিরে যেতে দেখা যায়। তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা যাত্রীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।

কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শ্রমিকদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের উত্তেজনা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

একইসঙ্গে ওসি বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছেন। তবে ৭টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়নি বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। এছাড়া রাত ৮টার পর ওসি উভয় পক্ষকে নিয়ে বসার পর সমাধান আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর