রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে মামলা

জেলা প্রতিনিধি, যশোর
প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০২৫, ১১:০১ এএম

শেয়ার করুন:

যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে মামলা
সহকারী কমিশনার আসিফ আলীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন তার স্ত্রী চৈতী (বাঁয়ে)। ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (শিক্ষা ও কল্যাণ শাখা) মো. আসিফ আলী জিভালের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে মারধর, মানসিক নির্যাতন ও পরনারীতে আসক্তির অভিযোগ তুলেছেন তার স্ত্রী দেওয়ান স্বীকৃতি রহমান ওরফে চৈতী। এ ঘটনায় ঢাকার সিএমএম আদালত ও যশোরে তিনি মামলা করেছেন।

যশোর শহরের পুরাতন কসবা বিবি রোড এলাকার দেওয়ান মিজানুর রহমানের মেয়ে চৈতী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। খুলনার সোনাডাঙ্গার বাসিন্দা নওয়াব আলীর ছেলে আসিফ আলী জিভালও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ ৫০ লাখ টাকা দেনমোহরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। উল্লেখ্য, জিভাল ও চৈতী উভয়ই আগে বিয়ে করেছিলেন। চৈতীর প্রথমপক্ষে একটি মেয়ে রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


চৈতী জানান, বিয়ের পর মাসখানেক যেতে না যেতেই জিভাল গাড়ি কেনার জন্য তার কাছে ২৫ লাখ টাকা দাবি করেন। কাঙ্ক্ষিত টাকা দিতে না পারায় তাকে শারীরিকভাবে (চড়-থাপ্পড়সহ লাঠি দিয়ে বাড়ি) আঘাত এবং মানসিকভাবে অত্যাচার করা হয়। পরদিন তিনি যশোরে বাবার বাড়ি চলে যান এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। যশোরে গিয়েও জিভাল ২৫ লাখ টাকার চাপ দিতে থাকেন। বাবার অর্থনৈতিক দৈন্যতার কথা জানিয়ে টাকা দিতে পারবে না জানালে আবারও তাকে মারধর করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, তাকে চুলের মুঠি ধরে টেনেহিঁচড়ে মেঝেতে ফেলে চড়, লাথি মারা হয়। এতে তার ঠোঁট কেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম হয়। তিনি যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। তিনি জানান, সংসার টিকিয়ে রাখতে দুপক্ষের আপস-মীমাংসার পর তিনি আবার শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যান।

২০২৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি যশোর কোতোয়ালি থানায় যৌতুকের দাবিতে মারধরের অভিযোগে মামলা করেন।

চৈতী অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে পল্লবী নামে এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়ান জিভাল। তাদের এ সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় শারীরিক ও মানসিকভাবে তিনি নির্যাতন শুরু করেন। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিএমএম আদালত এবং যশোর আদালতে মামলা করেছি। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করা হলেও কোনো সুরাহা করা হয়নি। এ কারণে ২০২৫ সালের ২ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছি। চৈতী বলেন, সবকিছু ভুলে আবারও স্বামী-সংসার করতে চাই।


বিজ্ঞাপন


নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আলী জিভাল বলেন, পরিস্থিতির শিকার হয়ে চৈতীকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলাম। তবে কখনো একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর সংসার বা থাকা হয়নি। তাকে মারধরের কোনো প্রশ্নই আসে না। তাকে কেন আমি নির্যাতন করব বা যৌতুক চাইব। মামলার এজাহারে মারধরের যে ঘটনার দিন ও সময় উল্লেখ করা হয়েছে, সে সময় আমি সাভারে প্রশিক্ষণে ছিলাম। মূলত আমাকে হেনস্থা করতে এ ধরনের মামলা করা হয়েছে। মামলা হয়েছে, আদালতই বিচার করবে।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর