শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫, ঢাকা

বিগত বছরগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের বদলে ভোটার বসানো হয়েছে: শিক্ষা উপদেষ্টা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, রাবি
প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম

শেয়ার করুন:

বিগত বছরগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের বদলে ভোটার বসানো হয়েছে: শিক্ষা উপদেষ্টা
শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর চৌধুরী রফিকুল আবরার

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিগত বছরগুলোতে কী ঘটেছে, আমরা সবাই জানি। শিক্ষক নিয়োগের বদলে সেখানে হয়েছে ভোটার নিয়োগ। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা এসেছি মেধার বিকাশ ও জ্ঞানের চর্চার জন্য। কিন্তু নিজেদের মধ্যে দলাদলি করলে নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয় চরমভাবে ব্যর্থ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের উচিত এমন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে। শিক্ষকদের এই দায়িত্ব অবশ্যই নিতে হবে।’


বিজ্ঞাপন


রোববার (৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সিনেট ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব।

প্রফেসর আবরার বলেন, ‘এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ছিলেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। কিন্তু এখন কিছু প্রক্টর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বদলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন, এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কে কী লিখছে তা নজরদারি করেন। শিক্ষক হিসেবে আমরা কতটা নিচে নেমে গেছি, এটি তারই উদাহরণ।’

আরও পড়ুন—


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, ‘ড. শামসুজ্জোহা পুলিশের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, আর এখন এমন দিন এসেছে যে, একটি ঘটনায় ঢাবির ভিসি পুলিশকে ছাত্রদের গুলি করার নির্দেশ দেন।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমরা এমন কিছু করো না যাতে শিক্ষকদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। নিজেদের দাবিদাওয়া আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আদায় করো। মনে রেখো, যারা এখন ভিসি পদে আছেন, তারা নিজেরা দায়িত্ব চাননি; আমরা তাদের হাতে-পায়ে ধরে এই দায়িত্ব দিয়েছি। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের ধৈর্যশীল ও সহনশীল হতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে রাবির ভিসি অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মূল্যায়ন করি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে অপরাজনীতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে। শিক্ষক নিয়োগেও পদে পদে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। সামনে আবারও শিক্ষক নিয়োগের পরিবর্তে ভোটার নিয়োগ হতে পারে। তাই এখনই আপনাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে—আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ রক্ষা করবেন, না ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ দেখবেন। দলীয় স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বমানের শিক্ষক ও মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে। সেই সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। আমাদের ছাত্ররা যেসব আত্মত্যাগ করেছে, তার ঋণ আমাদের শোধ করতে হবে। যদি আমরা এ জায়গায় বেইমানি করি, তবে আমরাই সবচেয়ে বড় বেইমান।’

আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ইমেরিটাস এ কে এম আজহারুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-ভিসি (প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, উপ-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর মো. ফরিদ উদ্দীন খান এবং কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মতিয়ার রহমান।

rss

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। এ সময় বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা। এরপর বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এবং প্রধান অতিথি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর