বরগুনার তালতলীতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জেরে উপজেলা বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে তালতলী উপজেলা শহরের সদর রোডে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। সংঘর্ষের সময় শহরে চরম আতঙ্ক বিরাজ করে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে।
বিজ্ঞাপন
আহত ব্যক্তিরা হলেন- সিদ্দিকুর রহমান (৩০), শাকিল (২৭), রবিউল মুসল্লি (২৬), মহসিন খান (২৭), মানু (৪৫), আলাউদ্দিন (৪৫), কবির (৩৫), রহিম (৪০), রুবেল (৩৪), সাহাবিদ খান (৪২), আব্দুল হাই (৫০), সাইদুল (৩৫), নুর মোহাম্মদ (৪৫), মিজান (২৫)।

আহতদের তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুরুতর চারজনকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও অনেকে ঘটনাস্থলে আহত হয়েছে। তারা প্রাইভেট হাসপাতালসহ বিভিন্নভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শহিদুল হক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম মামুন ও যুবদলের সদস্য সচিব রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দলীয় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চলছিল। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল (৩০ জুন) আহ্বায়ক শহিদুল হকের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী আবুল কালাম মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে মামুন-রিয়াজ গ্রুপের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনের পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় আহ্বায়ক শহিদুল হকের অনুসারীরা প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন আয়োজন করে। একই সময়ে মামুন ও রিয়াজের নেতৃত্বে পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানে প্রথমে হাতাহাতি ও পরে সংঘর্ষে রূপ নেয় পরিস্থিতি।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা নৌবাহিনীর সহায়তায় এক ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় শহরের ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দুই ঘণ্টার জন্য দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

যুবদল নেতা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ীদের ওপর চাঁদাবাজি ও মারধরের প্রতিবাদে আমরা কর্মসূচি দিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়।
অন্যদিকে, আহ্বায়ক মো. শহিদুল হক বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন চলাকালে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

তালতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মনিরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ১৪ জন আহতকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ৪ জনকে বরিশাল মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে উন্নত চিকিৎসার জন্য।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও উম্মে সালমা বলেন, বিএনপির দু’গ্রুপের সংঘর্ষের খবর পেয়ে নৌবাহিনীর সহায়তায় ১ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
প্রতিনিধি/এসএস

