নোয়াখালীর একটি বৃহত্তম পাইকারি মাছ ঘাট হলো হাতিয়া চেয়ারম্যান ঘাট। দীর্ঘদিন থেকে এ ঘাটটি প্রতিনিয়ত ভয়াবহ নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। এতে বড় একটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি অংশটুকু যদি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় তাহলে হারিয়ে যেতে পারে নোয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী এই মাছ ঘাটটি। তাই স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা নিজেদের উদ্যোগে ঘাটটি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রক্ষায় শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে, স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে ব্লক নির্মাণে সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন চেয়ারম্যানঘাট মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
![]()
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েক মাস ধরে নদীর তীব্র স্রোত মাছ ঘাটের বিভিন্ন অংশ গ্রাস করছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়েছে। ঘাটের যে অংশ থেকে জেলেরা মাছ নামান এবং ব্যবসায়ীরা কেনাবেচা করেন, সেই অংশগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে মাছ পরিবহন ও বেচাকেনায় চরম বিঘ্ন ঘটছে।
স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি সাহাব উদ্দিন কিরণ জানান, এই ঘাট আমাদের জীবন-জীবিকা। নদী ভাঙছে আর আমরা অসহায়ভাবে দেখছি। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী বাঁশ, বালির বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু এটা সাময়িক সমাধান। সরকারের পক্ষ থেকে যদি স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এই ঘাট আর থাকবে না। ফলে ঘাট, মাছের আড়ত, বরফ কারখানাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কয়েক লাখ লোক বেকার হয়ে পড়বে।
![]()
ঘাট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলেন, প্রতিদিন শত শত মানুষ এই ঘাটের ওপর নির্ভরশীল। মাছ কেনা-বেচা থেকে শুরু করে পরিবহন, সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু এটি। কিন্তু নদী যেভাবে ভাঙছে, তাতে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি, দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই ঘাটকে রক্ষা করা হোক।
বিজ্ঞাপন
নদী ভাঙনের কারণে শুধু মাছ ব্যবসায়ীরাই নয়, স্থানীয় অর্থনীতিতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। মাছের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে দাম বাড়ছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের ওপরও প্রভাব ফেলছে।
![]()
নদী ভাঙন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অভাবে এর ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। নোয়াখালী এই গুরুত্বপূর্ণ মাছ ঘাট রক্ষায় সরকারের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।
নোয়াখালী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী জানান, আমরা আমাদের পক্ষ থেকে তাদেরকে জিওব্যাগ প্রদান করেছি এতে অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে তারা তাদের নিজস্ব অর্থায়নে কাজ করছে। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সিডিএসপি প্রকল্পের আওতায় একটি আপদকালীন সময়ের জন্যই ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্থায়ীভাবে ব্লক নির্মাণের জন্য ও কাজ করছি আমরা।
প্রতিনিধি/এসএস

