সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

প্রচার মাইকিংয়ের উচ্চ শব্দে ঘুম ভাঙে মাদারীপুরবাসীর

জেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুর
প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৫, ১১:৩৮ এএম

শেয়ার করুন:

প্রচার মাইকিংয়ের উচ্চ শব্দে ঘুম ভাঙে মাদারীপুরবাসীর

মাদারীপুরবাসীর প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গে বিভিন্ন পণ্য প্রচারে ব্যবহার করা মাইকিংয়ের শব্দে। হাসপাতাল চত্বর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সবখানেই শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ রোগী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন কোম্পানির প্রচার-প্রচারণার মাইকিংয়ের উচ্চ শব্দের কারণে উচ্চ রক্তচাপ, শ্রবণশক্তি হ্রাসসহ মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হয়। এ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে মাইকিং-এর জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা জানান তথ্য কর্মকর্তা। জেলা প্রশাসন বলছে, আইন প্রয়োগের জন্য বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে।

শহর থেকে গ্রাম। পাড়া-মহল্লা, সবখানেই হচ্ছে যত্রতত্র মাইকিং। উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ জেলাবাসী। ব্যাহত স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কোনটি বিভিন্ন শপিংমলের ক্রেতাদের আকর্ষণীয় অফারের মাইকিং। কোনটি আবার রাজনৈতিক বা সামাজিক সংগঠনের কর্মসূচির। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সড়কগুলোতে এসব মাইকিং চলছে ঘুরে ঘুরে। গ্রামের সাধারণ রোগীদের আকৃষ্ট করতে সপ্তাহজুড়ে মাইকিং চলে অর্ধশতাধিক প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর। সাধারণ মানুষের কাছে মাইকের শব্দ দূষণ যন্ত্রণাদায়ক। অতিরিক্ত শব্দ উচ্চ রক্তচাপ, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্টসহ মানব স্বাস্থ্যের নানা অসুখের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট মাত্রায় মাইকিং-এর জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা জানায় জেলা তথ্য অফিস। যদিও জেলা প্রশাসন বলছে, স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০৬-এর আলোকে নেওয়া হবে আইনি পদক্ষেপ।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: সবুজের মাঝে সফলতার স্বপ্ন

প্রশাসন বলছে, নীরব ও আবাসিক এলাকায় দিনে ৫০ ও রাতে ৪০ ডেসিবল এবং শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭৫ ও রাতে ৭০ ডেসিবল মাত্রায় শব্দ করার নিয়ম রয়েছে। এই আইন অমান্য করলে ১-৬ মাসের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানার বিধান রয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করেও পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মাদারীপুর শহরে পানিছত্র এলাকার বাসিন্দা শচীন গাঙ্গুলি বলেন, ‘ঘরে ও বাইরে সবখানেই মাইকিং-এর উচ্চশব্দে অতিষ্ঠ। এটি বন্ধ করা উচিত, তা না হলে মানবদেহে বাড়তে পারে রোগের সংখ্যা।’

আরও পড়ুন: লাউয়াছড়ায় গাছের সঙ্গে ট্রেনের ধাক্কা


বিজ্ঞাপন


চরমুগরিয়া এলাকার বাসিন্দা খসরু আহম্মেদ বলেন, ‘সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মাইকিং চলতেই থাকে। একটি যায়, আরেকটি আসে। এর শেষ কোথায় আমরা জানি না। এককথায় এখন শব্দদূষণের কারণে আমরা বিরক্ত।’

হাজিরহাওলা গ্রামের বাসিন্দা ও আলহাজ আমিনউদ্দিন হাইস্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘বিজ্ঞাপনের মাইকিং-এর চাপে পড়ালেখার ক্ষতি হয়। যখন বাড়িতে থাকি, তখনও মাইকিং-এর উচ্চ শব্দে পড়ালেখা করতে পারি না। আমরা এর থেকে স্থায়ী মুক্তি চাই।’

মাদারীপুর জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এটি মূলত পরিবেশ অধিদফতরের দেখার কথা। তারপরও জেলা তথ্য অফিস থেকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। যাতে কেউ অধিক মাত্রায় মাইকিং বা শব্দ দূষণ করতে না পারেন।’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (মিডিয়া) শাহ্ মোহাম্মদ সজীব জানান, ‘কেউ উচ্চ শব্দে মাইকিং করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নির্দিষ্ট মাত্রায় শব্দ দূষণ করতে হবে। এটি আইনে সুস্পষ্ট বলা আছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারাও সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।’

প্রতিনিধি/ এমইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর