সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নাটোরে ৫ লাখ কোরবানির পশু প্রস্তত: শেষ সময়ে পশু যত্নে ব্যস্ত খামারিরা

মো. লিটন হোসেন লিমন, নাটোর
প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৫, ১১:৫১ এএম

শেয়ার করুন:

নাটোরে ৫ লাখ কোরবানির পশু প্রস্তত: শেষ সময়ে পশু যত্নে ব্যস্ত খামারিরা

কোরবানিকে সামনে রেখে নাটোর জেলায় ৫ লাখ ১৪ হাজার ২১৫টি পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। শেষ সময়ে পশু যত্নে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। ইতোমধ্যে নাটোরের বিভিন্ন হাটে ও খামারে পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। এ বছর জেলায় প্রায় আনুমানিক ২ হাজার কোটি টাকার পশু কেনা-বেচা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে নাটোর জেলায় ১৯ হাজার ৭৪৪টি খামারে ৫ লাখের অধিক পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যার মধ্য নাটোর সদর উপজেলায় ২ হাজার ৩২৮টি খামারে ৮৯ হাজার ২৩০টি পশু, বাগাতিপাড়া উপজেলায় ৩ হাজার ৪৮৮টি খামারে ২৯ হাজার ৩৯৪ টি, গুরুদাসপুর উপজেলায় ২ হাজার ৭২৫ টি খামারে ৯৭ হাজার ৮৯৪টি, সিংড়া উপজেলায় ৩ হাজার ২৮২টি খামারে ৯৭ হাজার ২৬৭ টি, বড়াইগ্রাম উপজেলায় ২ হাজার ৯৬৭টি খামারে ৬৬ হাজার ২৯টি, লালুপর উপজেলায় ৩ হাজার ৭৬২টি খামারে ৭৬ হাজার ১৭৬টি এবং নলডাঙ্গা উপজেলায় ১ হাজার ১৯২টি খামারে ৫৮ হাজার ২২৫টি পশু রয়েছে। এর মধ্য ষাঁড় গরু রয়েছে ৮৬ হাজার ৬৮৬টি, গাভি গরু ১৬ হাজার ৮২৩টি, বলদ গরু ১৪ হাজার ৮০৮টি, মহিষ ৭ হাজার ৯২৮টি, ছাগল ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৭টি, ভেড়া ৩৮ হাজার ৪৫১টিসহ আরও ৩২টি অন্যান্য পশু রয়েছে। জেলায় এ বছর প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার ২০৫ কোরবানির পশু জবাই করা হবে বলে তথ্যে জানানো হয়। এবং উদ্বৃত্ত প্রায় ২ লাখ ৪১ হাজার ১০টি পশু ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার হাটে বিক্রি করা হবে।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_IMG_20250526_112440

এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় দু'টি অনলাইন প্লাটফর্ম 'নাটোর পশুর হাট' ও 'অনলাইন ডিজিটাল পশুর হাট' থেকে কোরবানির পশু কেনা-বেচা করা হবে। এছাড়া জেলার ৭ উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিস, ব্যক্তি উদ্যোগে এবং খামারসহ প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি অনলাইন ফেসবুক প্লাটফর্মে কোরবানির পশু কেনা-বেচা কাজ শুরু হয়েছে।

শহরের তেবাড়িয়া এলাকার খামারি মোহর আলী বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বিক্রির জন্য খামারে ৮টি ষাঁড় গরু প্রস্তুত করেছি। আমার খামারে শুধু খৈল, গম, ভুসি, ছোলা এবং সবুজ ঘাস খাইয়ে খুব সহজেই পশু মোটাতাজা করেছি। যদি বাজার ভালো থাকে তাহলে প্রতি গরু দুই থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবো।

লক্ষ্মীপুর এলাকার খামারি মামুন বলেন, আমার খামারে ৮টি ষাঁড় গরু বিক্রির জন্য রেখেছি। বর্তমানে গরুর বাজার মূল্য মোটামুটি ভালো। আশা করছি, দাম কিছুটা বাড়তে পারে। গবাদি পশুর খাদ্যের দাম অনেক বেশি, তাতে পশু পালন করা কঠিন। তেমন লাভ হয় না। শুধু টাকা ধরে রাখার জন্য যদি গরুর বাজার মূল্য ঠিক থাকে তাহলে কিছু টাকা আয় করতে পারব।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_IMG_20250526_112600

হয়বতপুর এলাকার খামারি রাজু হোসেন বলেন, ৪ বছর আগে খামারে ৬টি ষাঁড় গরু পালন শুরু করেন তিনি। গত বছর ষাড়ের দাম কম থাকায় বিক্রি করেননি। এ বছর বাজার ভালো থাকলে সব গরু বিক্রির আশা করছেন এ খামারি।

গুরুদাসপুর উপজেলার খামারি আজিজুর হক বলেন, তিন বছর আগে শখের বশে একটি খামার গড়েছি। আমার খামারে বর্তমানে ১৭টি ষাঁড় গরু রয়েছে। যার মধ্য দু'টি গরু বিক্রি করেছি। বাকি গরু ঈদের আগেই বিক্রির আশা রয়েছে। যদি এমন দাম থাকে তাহলে কিছু টাকা আয় করতে পারব।

খামারে পশু কিনতে আসা শফিকুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, আমি প্রতি বছর খামার থেকে গরু ক্রয় করি। খামার থেকে গরু কিনলে সুবিধা রয়েছে, ঈদ পর্যন্ত গরু খামারে রাখা যায়। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয় না। তবে এ বছর গরুর দামটা বেশি মনে হচ্ছে।

আরও পড়ুন

রাজবাড়ীতে জমে উঠছে কোরবানির পশুর হাট

হাটে গরু কিনতে আসা রাফি রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, কোরবানির জন্য মাঝারি গরু খুঁজছি। ৫ জনের ভাগে কোরবানি করব। তবে গরু দামটা এবার একটু বেশি মনে হচ্ছে। আমরা দেড় লাখের বাজেটের মধ্য গরু কিনতে এসেছি।

নাটোর জেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, এ বছর জেলায় প্রায় ৫ লাখ ১৪ হাজার ২১৫টি কোরবানির পশু প্রস্তত রয়েছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা মতো। নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পশু উৎপাদনে খামারিদেরকে প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শসহ বিভিন্ন সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর