প্রচণ্ড গ্রীষ্মের রোদ আর ২৬ হাজার মানুষের উপস্থিতি। এই বাস্তবতা মাথায় রেখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পঞ্চম সমাবর্তনের প্যান্ডেলে বসানো হচ্ছে এয়ারকন্ডিশনার, এয়ারকুলার ও সিলিং ফ্যান।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান আইডিয়া কমিউনিকেশনের দেওয়া তথ্যমতে, প্রায় ১৩ কোটি টাকা বাজেটের এ আয়োজনে থাকবে ১২০টি এয়ারকুলার, ২০০ টন ধারণক্ষমতার এয়ারকন্ডিশন এবং ১ হাজার ১০০টি সিলিং ফ্যান। দীর্ঘ ৯ বছর পর আয়োজিত এই সমাবর্তনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে এমন ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিজ্ঞাপন
তবে প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে আর ২৬ হাজার মানুষের সমাগমে এই ব্যবস্থা পর্যাপ্ত হবে কিনা, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। আইডিয়া কমিউনিকেশনের এক ইভেন্ট ম্যানেজার জানান, ‘গরম যদি সহনীয় থাকে, তাহলে এই ব্যবস্থাগুলো যথেষ্ট হবে। তবে তাপমাত্রা আরও বেড়ে গেলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হতে পারে।’
তিনি আরও জানান, পুরো প্যান্ডেলে এয়ারকন্ডিশনিংয়ের পরিকল্পনা থাকলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ ও অতিরিক্ত খরচের কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। কেবল এসির জন্য অতিরিক্ত খরচ দাঁড়াতো প্রায় ৬০ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘সমাবর্তনের মূল মঞ্চে এসি থাকবে। চারপাশে থাকবে শতাধিক এয়ারকুলার। এই গরমেও আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ও স্মরণীয় সমাবর্তন উপহার দিতে।’
বিজ্ঞাপন
১৪ মে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বসছে দেশের অন্যতম বৃহৎ এই সমাবর্তন। এতে ২০১১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা মোট ২২ হাজার ৫৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ২২ জন পিএইচডি ও ১৭ জন এমফিল ডিগ্রিধারী।
সমাবর্তনের মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি চবির সাবেক শিক্ষক। তাকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করা হবে। সভাপতিত্ব করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার।
অনুষদভিত্তিক অংশগ্রহণে শীর্ষে রয়েছে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ (৪ হাজার ৯৮৭ জন), এরপর ব্যবসায় প্রশাসন (৪ হাজার ৫৯৬ জন), সমাজবিজ্ঞান (৪ হাজার ১৫৮ জন) এবং বিজ্ঞান অনুষদ (২ হাজার ৭৬৭ জন)।
সমাবর্তনের ব্যয়ভারের অর্ধেকের বেশি—প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা—আসছে শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন ফি থেকে। বাকি অর্থ দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি ও বিভিন্ন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান। অনুষ্ঠান সফল করতে গঠন করা হয়েছে ১৯টি উপকমিটি।
নিরাপত্তা ব্যবস্থায় থাকবে রাষ্ট্রীয় বিশেষ বাহিনী এসএসএফ। দুপুর ১টার পর অনুষ্ঠানস্থলে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না এবং ব্যক্তিগত যানবাহন ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবে না।
সমাবর্তনে যাতায়াতের সুবিধায় শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে চলবে ১০০টি বিশেষ বাস ও ৪টি বিশেষ শাটল ট্রেন। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ চলাচলের জন্য থাকবে শাটল বাস সার্ভিস ও গেটসংলগ্ন পার্কিং ও বাস ট্রান্সফার ব্যবস্থা।
সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ২৬ হাজার উপহার প্যাকেজ, যার মধ্যে রয়েছে একটি জুটের ব্যাগ, কোর্ট পিন, কলম, মোবাইল ওয়ালেটসহ একটি কম্বো বক্স।
অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার, জারুলতলা ও সায়েন্স ফ্যাকাল্টি চত্বরে থাকবে বড় এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি দেখার ব্যবস্থা।
প্রতিনিধি/এসএস

