চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সবুজ ছায়াঘেরা ক্যাম্পাস যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। সমাবর্তনের মূল আয়োজন শুরু হতে এখনো বাকি দুই দিন, কিন্তু ততক্ষণ অপেক্ষা না করেই উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে পুরো চবি। চারপাশ জুড়ে শুধুই আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ফিরে আসার গল্প।
সমাবর্তনের মূল দিন ১৪ মে হলেও তার আগের দুই দিন থেকেই উৎসবের আমেজে মুখর হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। সবুজ পাহাড় ও জঙ্গলে ঘেরা এই ক্যাম্পাস এখন হাজারো প্রাক্তন শিক্ষার্থীর পদচারণায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। ১২ মে সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেন সমাবর্তনগ্রস্ত গ্র্যাজুয়েটরা। কেউ গায়ে পরেছেন কালো গাউন, কারও মাথায় টুপি—আবার কেউ ক্যামেরাবন্দি করছেন প্রিয় ক্যাম্পাসের স্মৃতি।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন, বাংলা চত্বর ও হল প্রাঙ্গণে দেখা গেছে চেনা মুখের প্রাণখোলা আড্ডা, হাসি আর ছবি তোলার দৃশ্য। দীর্ঘদিন পর একসঙ্গে হওয়া—বন্ধুত্বের সেই পুরনো গন্ধ যেন আবার ফিরে এসেছে চবির বাতাসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ২২ হাজার ৫০০ গ্র্যাজুয়েট। আয়োজকেরা বলছেন, অংশগ্রহণের দিক থেকে এটি বিশ্বের বৃহৎ সমাবর্তনগুলোর একটি হতে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে নির্মিত হয়েছে সুবিশাল প্যান্ডেল। গরম বা বৃষ্টিতে যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রস্তুতির প্রায় সব কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
অনেক গ্র্যাজুয়েটের কাছে এই আয়োজনে অংশগ্রহণ এক অপূর্ণতার পূরণ। বাংলা বিভাগের সমাবর্তনগ্রস্ত শিক্ষার্থী শর্মী দে বলেন, ‘আমাদের সময় সমাবর্তন হয়নি। আজ এখানে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে, দীর্ঘ অপেক্ষার প্রতিদান পেলাম।’
বিজ্ঞাপন
আইন বিভাগের ইমরান হোসাইন বলেন, ‘২০১৮ সালে পাস করেছি। এবার ২০২৫-এ এসে সমাবর্তন পাচ্ছি। দেরি হলেও এই মিলনমেলা অনেক আনন্দের।’

সমাবর্তনের এই উচ্ছ্বাসে বর্তমান শিক্ষার্থীরাও যুক্ত হয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক ও স্বাগত টিমের সদস্য হিসেবে। সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আয়োজন এখন আর শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়—বরং প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের স্মৃতি, ভালোবাসা আর গর্বের এক বিশাল মঞ্চ।
প্রতিনিধি/একেবি

