মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫, ঢাকা

পেট্রল ঢেলে স্ত্রীর ও নিজের শরীরে আগুন দিলেন স্বামী 

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮ মে ২০২৫, ০৮:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

Petrol
অগ্নিদগ্ধ নুরুল আলম। ছবি- ঢাকা মেইল

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পরকীয়ার সন্দেহে রহিমা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূর শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিলেন স্বামী নুরুল আলম (৪৫)। এসময় নিজের শরীরেও আগুন দেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে উপজেলার উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের চরপক্ষী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 


বিজ্ঞাপন


ঘটনার পর স্থানীয়রা দগ্ধ অবস্থায় রহিমা ও আলমকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়। 

জানা গেছে, এ ঘটনায় রহিমার শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ ও আলমের পা-হাত-বুকসহ শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। 

দগ্ধ রহিমা উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের গাইয়ারচর এলাকার আব্দুল হামিদের মেয়ে ও আলম একই ইউনিয়নের চরপক্ষী গ্রামে আব্দুর মান্নানের ছেলে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। 

জানা যায়, কয়েক বছর আগে আলম একই ইউনিয়নের গাইয়ারচর এলাকার রহিমাকে বিয়ে করেন। এটি দুজনরই দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। বিয়ের পর প্রায় ৯ লাখ টাকা ধারদেনা করে আলম চরে দোকানঘর নির্মাণ করে ব্যবসা শুরু করেন। দিনের বেশিরভাগ সময় তিনি সেখানেই থাকেন।


বিজ্ঞাপন


আলমের অভিযোগ, এই সুযোগে দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের কানিবগার চরের কাদির সিকদারের সঙ্গে রহিমার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের ২২ জুলাই দোকান থেকে এসে তিনি কাদির ও রহিমাকে একসঙ্গে ঘরে দেখতে পান। 

এ ঘটনায় রায়পুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন আলম। স্থানীয় গণ্যমান্যদেরও জানান। কিন্তু ঘটনার কোনো সুরাহা হয়নি। 

আলমের দাবি, এরমধ্যে রহিমা তার পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে অবাধে মেলামেশা শুরু করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন আলম। তারই জেরে তিনি স্ত্রী ও নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

আলম বলেন, ‘কোথাও কোনো বিচার না পেয়ে প্রচন্ড রাগ হয়। পেট্রল কিনে বাড়িতে এসে দেখি কাদিরসহ তার লোকজন বসে আছে। এ নিয়ে ঘরে ঢুকে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রাগে ক্ষোভে পেট্রল ঢেলে রহিমার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছি। নিজের গায়েও আগুন লাগিয়েছি।’ 

এ ঘটনায় কথা বলা যায়নি রহিমার সঙ্গে। তবে তার ভাগনি লুবনা আক্তার বলেন, পেট্রল ঢেলে আমার খালার শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয় আলম। পরে স্থানীয়রা আগুন নেভায়। এসময় ধস্তাধস্তি করায় খালার শরীরের আগুন আলমের গায়েও লাগে।’

তবে কী কারণে আগুন লাগানো হয়েছে, তা বলেতে পারেননি লুবনা আক্তার। 

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অরুপ পাল বলেন, ‘দগ্ধ অবস্থায় দুজনকে হাসপাতালে আনা হয়। এরমধ্যে নারীর শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ ও পুরুষের প্রায় ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়। তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’ 

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এর আগেই দগ্ধদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালেও পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এএইচ 

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর