সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মামলার অগ্রগতি নেই আট মাসেও, নিরাপত্তাহীনতায় ব্যবসায়ীর পরিবার

জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা
প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৯ পিএম

শেয়ার করুন:

মামলার অগ্রগতি নেই আট মাসেও,  নিরাপত্তাহীনতায় ব্যবসায়ীর পরিবার

কুমিল্লার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও মানবাধিকার কর্মী মওদুদ আবদুল্লাহর কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করে সন্ত্রাসীরা। তিনি চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে কুমিল্লার গোমতী নদী সংলগ্ন টিক্কাচর ব্রিজের তার সিএনজি ১৪ জন গতিরোধ করে তাকে ছুরি ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে তাকে রাস্তায় ফেলে যায়। তখন তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন,টাকা এবং অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে যায়। পরে তার জ্ঞান ফিরলে তিনি তার এক বন্ধুর সাহায্যে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেন। 

মওদুদ আবদুলাহ শুভ্র অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল ওয়াদুদ ভুইয়া এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা হালিমা বানুর ছেলে। তিনি পেশায় একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং মানবাধিকার কর্মী। নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন চৌধুরীর পাড়ার ইসমপুর সড়কে তিনি বসবাস করেন।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্র সাংবাদিকদের জানান, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মধ্যে পতনের দু’দিন আগে ৩ আগস্ট থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকার কারণে গত বছরের ১৯ আগস্ট দ্রুত বিচার আইনে অজ্ঞাতনামা ৩ পুরুষ ও একজন নারীকে আসামি করে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরসহ মামলা দায়ের করি। মামলার আট মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনও এজহারভুক্ত একজন আসামি গ্রেফতার হয়েছে বাকি সবাই এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।

মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্র বলেন, তিনি আরও জানান, মামলা করে তিনি আরও ফেঁসে গেছেন। এজহার নামীয় আসামিদের মধ্যে মাত্র একজন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। বাকি আসামিরা বিগত ৮ মাসেও ধরা না পড়েনি। এজহার ভুক্ত আসামিরা অজ্ঞাত স্থান থেকে এবং বিবাদী পক্ষের আত্মীয় স্বজন এবং স্যার গ্রুপের সদস্যরা তাকে ও পরিবারকে হত্যা করে লাশ গোমতী নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ কারণে এখন শুভ্র ও তার পরিবার সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি নিয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে। তার স্ত্রীকে অ্যাসিড মেরে মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এতে তিনি কলেজে যাওয়া আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এ কারণে তিনি শনিবার (১২ এপ্রিল) জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজির আহমেদ খাঁন বরাবর পরিবার ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত দরখাস্ত প্রদান করেছেন। এছাড়া রোববার (২৯ এপ্রিল) সকালে কোতোয়ালি মডেল থানায় সর্বশেষ জিডি করি। আসামিরা ও তাদের আত্মীয় স্বজন অজ্ঞাত স্থান থেকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছি মামলা না তুলে নিলে আমাকে জানে মেরে লাশ গুম করে ফেলবে। তারা বিভিন্ন মোবাইল দিয়ে আমার ও আমার পরিবারকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। কখনও তারা প্রশাসনের নাম ভাঙ্গায় আবার তারা ওই এলাকার শক্তিশালী স্যার গ্রুপের ছত্রছায়ায় আছে বলে আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। এমন অবস্থায় আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। 

আরও পড়ুন

অস্ত্র-গুলিসহ কুখ্যাত সন্ত্রাসী মোটা সবুজ গ্রেফতার

মামলা দিয়ে তুলে নিয়ে সরাসরি গুম করে ইট ভাটায় লাশ পুড়িয়ে ফেলবে বলে হুমকি দেয়।  কিছুদিন ধরে অপরিচিত বিভিন্ন অজ্ঞাত পরিচয় হেলমেট পরা লোকজন প্রতিনিয়ত ভুক্তভোগী মওদুদ শুভ্রের চারপাশে ঘোরাফেরা করছে। যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।


বিজ্ঞাপন


কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই ও মামলার আইও খাজু মিয়া জানান, এজহার নামীয় অভিযুক্ত অপরাধী একজনকে গ্রেফতার করেছি। আসলে আমরা ফোর্স নিয়ে টহল দিতে রওয়ানা হলে আসামিরা খবর পেয়ে গাঁ ঢাকা দিয়ে দ্রুত স্থান পরিবর্তন করেন।

ভুক্তভোগী মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্র জানিয়েছেন, তাকে মোটরসাইকেলে এসে অস্ত্র দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমার নলেজে আসার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়েছি তার নিরাপত্তার জন্য। তারা চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী তাই ভুক্তভোগীর কাছে প্রশাসনের নাম ভাঙ্গায়।

কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজির আহমেদ খাঁন বলেন, আমি মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্রকে বলেছি, কোনো সমস্য হলে যেকোনো সময় আমাকে ফোন দিবেন আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্র বলেন, গ্রামবাসীসহ আমার পরিবার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করব এবং কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করব।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর