দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় বেহাল হয়ে আছে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার অংশ। পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। এ অবস্থায় এবার ঈদযাত্রায় মহাসড়কটিতে যাত্রীভোগান্তির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও, ভোগান্তি এড়াতে ইতোমধ্যেই খানাখন্দ মেরামত শুরু করছে সড়ক বিভাগ। তবে ঈদে তা কতটা স্বস্তি দেবে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েই যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন সিলেট-চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা ও কুমিল্লা-সিলেট রুটে অসংখ্য গাড়ি যাতায়াত করে। মহাসড়কটির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-বিশ্বরোড মোড়, ঘাটুরা, পুনিয়াউট, রাধিকা, সুলতানপুর ও ধরখার এলাকায় অন্তত তিন কিলোমিটার অংশের পিচ উঠে গেছে দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে। বিভিন্ন জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। ফলে বেহাল অংশগুলোতে প্রায়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটার পাশাপাশি যানবাহনের ধীরগতির কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সড়কে দীর্ঘ সময় গাড়িতে বসে যাত্রীদের ভোগান্তি যেমন বাড়ে, তেমনি নষ্ট হয় কর্মঘণ্টা।
বিজ্ঞাপন
এ দিকে, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটি চার লেনের জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করার কাজ করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। তবে নানা সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে সড়কের কাজ শেষ করতে না পারায় যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে। এই সড়কের বেশিরভাগ অংশ পড়েছে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে। মূলত প্রকল্পের অধীনে পড়ায় সড়কটিতে নিয়মিত সংস্কার কাজ করতে পারেনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটুরা এলাকার বাসিন্দা আরমান সড়কের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা মেইলকে বলেন, ঘাটুরা মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে পেট্রোলপাম্প পর্যন্ত অংশটুকু দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে আছে। সড়কের নির্মাণ কাজের জন্য প্রতিনিয়ত ওড়ে ধূলাবালি। এতে করে স্থানীয়দের অনেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। সড়কটিতে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।
বিজ্ঞাপন
সদর উপজেলার সুলতানপুর এলাকার বাসিন্দা রফিক মিয়া জানান, খানাখন্দের কারণে প্রায়ই গাড়িগুলো দুর্ঘটার শিকার হয়। চার লেন মহাসড়কের নির্মাণ কাজ যত বিলম্বিত হচ্ছে, মানুষের দুর্ভোগ তত বাড়ছে। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এবার ঈদযাত্রায় তীব্র যানজট তৈরি হয়ে মানুষের ভোগান্তির অন্ত থাকবে না।
মামুন মিয়া নামে একজন ট্রাকচালক জানান, সরাইল-বিশ্বরোড মোড় থেকে ধরখার পর্যন্ত যেতে কয়েকটি স্থানে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এর ফলে গতি কমিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। এতে করে গাড়ির জট লেগে যায়। এ অবস্থায় বেহাল অংশগুলো সংস্কার করা না গেলে ঈদে ভোগান্তি বাড়বে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ ঢাকা মেইলকে বলেন, বেহাল অংশগুলো আমরা ইতোমধ্যে মেরামত শুরু করেছি। কয়েকটি অংশের মেরামত শেষ হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে ও যানজট যেন তৈরি না হয়- সেজন্য ঘাটুরা এলাকায় নির্মাণাধীন সড়কের একটি লেন খুলে দেওয়া হয়েছে।
খানাখন্দ খাকলেও মহাসড়কে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে বলে জানান খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন রহমান। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, বিশ্বরোডে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। দুইটা মোবাইল টিম আছে। একটি কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও অন্যটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে কাজ করছে। ঈদ সামনে রেখে যানজট নিরসনে ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে। যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের চেষ্টার কমতি নেই।
ইএ