মোটর শ্রমিকের দুই নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে বগুড়া থেকে সব রুটে পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা।
বুধবার (১৯ মার্চ) সকাল থেকে বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেলে শহরের স্টেশন রোডে নারিকেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের বাকবিতণ্ডা থামাতে গিয়ে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের দুই নেতার ওপর হামলা করে ব্যবসায়ীরা।
হামলায় আহতরা হলেন, বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রানা এবং সদস্য হজরত আলী। এরা দু’জনেই বর্তমানে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই হামলার জের ধরে বুধবার সকাল থেকে পরিবহন শ্রমিকরা শহরের চারমাথা, ঠনঠনিয়া, হাড্ডিপট্টি, স্টেশন রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় লাঠিসোঁটা নিয়ে সড়কে নেমে বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেন। আকস্মিকভাবে পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। বিশেষ করে ঢাকাগামী যাত্রীরা আগাম টিকিট সংগ্রহ করেও গন্তব্যে যেতে পারছেন না। ঠনঠনিয়া ঢাকা বাস টার্মিনালে ঢাকাগামী যাত্রী বেলাল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাতে টিকিট সংগ্রহের সময় কাউন্টার থেকে কিছু বলা হয়নি। সকালে টার্মিনালে এসে জানতে পারি শ্রমিকরা বাস চলতে দিচ্ছেন না। শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার তপন কুমার বলেন, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় তারাও বিপাকে পড়েছেন। তিনি আমাদের টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নাই।
বিজ্ঞাপন
এদিকে মঙ্গলবার দু’জন পরিবহন শ্রমিক নেতার ওপর হামলার পর বুধবার শহরের স্টেশন রোডে ব্যবসায়ীরা দোকান পাট বন্ধ রাখেন। বুধবার বেলা ১১টার দিকে পরিবহন শ্রমিকরা স্টেশন রোডে বন্ধ রাখা নারিকেলের দু’টি আড়তে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই দোকান দু’টি হামলার শিকার শ্রমিক নেতা আনোয়ার হোসেনের। মানিক এবং রতন নামের দুই ব্যবসায়ী ভাড়া নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন।
বগুড়া জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির দায়িত্ব প্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল বারী এরশাদ বলেন, শ্রমিক নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। যার কারণে বগুড়া থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া কর্মবিরতির কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের অন্য জেলা থেকে ছেড়ে আসা দুর পাল্লার বাসগুলো চলাচলে শ্রমিকরা বাধা দিচ্ছেন না।
বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু বলেন, আমাদের শ্রমিক নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছি। এর কঠোর বিচার চাই। নইলে সংগঠন কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈনুদ্দীন বলেন, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।
দু’জন পরিবহন শ্রমিক নেতার ওপর হামলার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতেই নারিকেল ব্যবসায়ী রতনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।
প্রতিনিধি/এসএস