পাওয়ার চায়নার কান্ট্রি ম্যানেজার হান কুন বলেছেন, আমরা এমন এক সময় তিস্তা নদীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে এসেছি যখন এখানকার মানুষ জমি-ভিটা-সম্পদ হারিয়েছেন। এজন্য আমরা শুনতে এসেছি এখানকার মানুষের কথা। এ প্রকল্প ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো প্রভাব ফেলবে না; কারণ এটা একটা বাণিজ্যিক প্রকল্প। যে প্রকল্পে মানুষের উপকার হয় সে প্রকল্পে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট গৌণ এবং এ প্রকল্প পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক হবে না।
সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে রংপুর জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা এবং পুনরুদ্ধার এসব প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি। এসময় অংশীজনরা চীন-ভারতের রশি টানাটানি বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরুর দাবি জানান।
বিজ্ঞাপন
বক্তারা বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেই এর কাজ উদ্বোধন করতে হবে। উত্তরের জীবনরেখা তিস্তা অববাহিকার দুই কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা বাঁচাতে সরকারের সঠিক সময়ে পরিকল্পনার কাজ শুরু করতে হবে।
বক্তারা বিচ্ছিন্নভাবে নদীর কাজ করার বিপক্ষেও মত দেন। তারা দাবি করেন তিস্তায় ক্ষতিগ্রস্ত সব পক্ষের কাছে শুনতে হবে কথা। তিস্তায় যেসব কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান দখল করে আছে। তাদের সরিয়ে দিতে হবে। দখলমুক্ত করতে হবে তিস্তা।
মতবিনিময় সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, মতবিনিময় সভায় অংশীজনদের বক্তব্যের ভিডিও রেকর্ড ছাড়াও সকল পরামর্শ নোট করা হচ্ছে। এর সবকিছুই পানি সম্পদ উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হবে। তারপরই এই প্রকল্প বাস্তবায়নের একটি চূড়ান্ত রূপরেখা করা হবে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মো. রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কনক রহমান, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক ও যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র করেসপনডেন্ট সরকার মাজহারুল মান্নান, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক জহির রায়হান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগরের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহম্মদ ইমতি, জেলা আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রিভারাইন ক্লাবের শামসুর রহমান সুমন, গ্রিন ভয়েসের সোহানুর রহমান প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
শুরুতে প্রকল্পের উপর ডকুমেন্টারি উপস্থাপন করেন পাওয়ার চায়নার কনসালটেন্ট প্রকৌশলী মকবুল হোসেন। পরে মতবিনিময় সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, পাওয়ার চায়না, নদী আন্দোলনে যুক্ত নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, তিস্তার দুর্দশায় ভুক্তভোগী ছাড়াও গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ অংশ নেন।
প্রতিনিধি/এফএ