ভোলার বোরহানউদ্দিনে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে আসামির স্বজনদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। বর্তমানে তারা বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের বাটামারা গ্রামের আলিমুদ্দিন বাংলাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিদ্দিকুর রহমান ঢাকা মেইলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আহত দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন-বোরহানউদ্দিন থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. আলমাস ও নুরুল ইসলাম। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির নাম মো. রুবেল। তিনি বাটামারা গ্রামের মো. নসু মিয়ার ছেলে।
বোরহানউদ্দিন থানার পুলিশ দাবি করছে, সোমবার রাতে বোরহানউদ্দিন থানার এএসআই আলমাস ও নুরুল ইসলাম ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি রুবেলকে গ্রেফতার করতে বাটামারা গ্রামে যায়। এসময় রুবেলকে পুলিশ ধরলে স্বজনরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। স্বজনদের হামলায় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা রক্তাক্ত জখম হয়। খবর পেয়ে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশের একটি টিম তাদেরকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
এদিকে, এ ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের আসামি করে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার রাতে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযানে নামে। সোমবার ভোররাত পর্যন্ত কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের স্বার্থে এ বিষয়ে পুলিশ গণমাধ্যমকে বিস্তারিত কিছু বলছে না।
তবে স্থানীয় পর্যায়ে গুঞ্জন রয়েছে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা যে আসামিকে গ্রেফতার করতে গিয়েছে, প্রকৃতপক্ষে তিনি কোনো আসামি নন। তিনি একজন নির্দোষ ব্যক্তি ছিলেন। স্বজনরা ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বারবার অনুনয় বিনয় করে জানাচ্ছিল এই রুবেল নির্দোষ ব্যক্তি এবং তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। এরপরও পুলিশের এই দুই কর্মকর্তা স্বজনদের কোনো কথাই কর্ণপাত না করে হাতকড়া লাগানোর চেষ্টা করে। যার ফলে পুলিশের সঙ্গে স্বজনদের প্রথমে ধ্বস্তাধস্তি হয়, এরপর স্বজনরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করে।
পুলিশের ওপর প্রকৃতপক্ষে কেন হামলা করা হয়েছে তা জানতে অভিযুক্তদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত অভিযুক্ত কারও বক্তব্য ঢাকা মেইলের কাছে পৌঁছায়নি। ঘটনার পর সবাই মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে আত্মগোপনে আছেন।
পুলিশ প্রকৃত আসামি গ্রেফতার করতে গিয়ে এ হামলা নাকি আসামি গ্রেফতারে পুলিশের ভুল ছিল এ বিষয়ে জানতে ভোলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শরীফুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢাকা মেইল। তিনি ঢাকা মেইলকে জানান, ঘটনাটি তদন্ত করা শেষ হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে। আহত পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি পুলিশ প্রকৃত আসামির জায়গায় ভুলক্রমে অন্য লোককে গ্রেফতার করতেও যায়। তাহলেও কি স্বজনরা পুলিশের ওপর এমন অতর্কিত হামলা করতে পারে? পুলিশ যদি ভুল ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসতো এবং যদি প্রমাণিত হতো যে, তিনি প্রকৃত আসামি নন। তাহলে তো পুলিশ তাকে ছেড়ে দিত।
প্রতিনিধি/এসএস

