আজ কিশোরগঞ্জের ভৈরব মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস হলেও তিন দিন পর ১৯ ডিসেম্বর ভৈরবে পাকসেনারা আত্মসমর্পন করে।
কারণ তৎসময়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা টেলিযোগাযোগ, ওয়ারলেস ও টেলিগ্রাম সিস্টেম নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রেডিওর প্রচারে পাকহানাদাররা বিশ্বাস করতে পারছিল না যে, তাদের বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে, পাকসেনারা পূর্বাঞ্চলীয় শহর চট্রগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, আখাউড়া, কসবা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া ও আশুগঞ্জ এলাকায় মিত্রবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে প্রায় ১০ হাজার সেনা ভৈরবে অবস্থান নেয়। ১১ ডিসেম্বর পাকসেনারা ভৈরবে আসার পর ১৩ ডিসেম্বর ভৈরব মেঘনা রেলওয়ে সেতুটি ডিনামাইট দিয়ে ধ্বংস করে দেয়। এতে ঢাকা - চট্রগ্রাম রেলপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
পাকসেনাদের ধারণা ছিল, মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা পায়ে হেঁটে সেতু দিয়ে আশুগঞ্জ থেকে ভৈরবে পৌঁছে যেতে পারে। সেজন্য নিজেদের রক্ষার জন্য সেনারা ভৈরবে আসার পর রেলওয়ে স্টেশন, বিদ্যুৎ অফিস, টেলিফোন অফিস ধ্বংস করে। তারা তৎকালীন ন্যাশনাল ব্যাংকের ( বর্তমান সোনালী ব্যাংক) ট্রেজারির সিন্দুক ভেঙে টাকা-পয়সা লুটপাট করে।
এসময়ে হানাদাররা বুঝতে পারে তাদের পরাজয় খুব নিকটে। তখন মিত্রবাহিনী আকাশ পথে যুদ্ধবিমান থেকে ভৈরব শহরের ওপর গোলাবর্ষণ করতে থাকে। এতে হানাদার বাহিনী আতঙ্কিত হয়ে যায়। তারা খাবারের সংকটে পড়ে দিশেহারা হয়ে যায়।
১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী ভৈরবের চারিদিকে অবস্থান নিয়ে মাইকে পাকসেনাদের আত্মসমর্পন করার ঘোষণা করে। তারপর ১৯ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর উর্ধ্বতন অফিসাররা বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে ভৈরবের সেনাদের আত্মসমর্পন করতে নির্দেশ দেয়।
বিজ্ঞাপন
চিঠি পেয়ে এদিন ভৈরবের প্রায় ১০ হাজার পাকসেনা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করে। এরপর ভৈরববাসী ও মুক্তিযোদ্ধারা আনন্দে মেতে উঠেন। স্বাধীনতার স্বাদ পেয়ে মানুষ উল্লাস করতে থাকে।
প্রতিনিধি/ এজে