যশোরের মণিরামপুর উপজেলার নাগরঘোপ গ্রামে দেশের একমাত্র খেজুর গাছ রিসার্চ গার্ডেন জলাবদ্ধতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪ বছর আগে জেলা প্রশাসনের দেওয়া জমিতে খেজুরগাছ গবেষক সৈয়দ নকিব মাহমুদ এই রিসার্চ গার্ডেনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু চলতি বছরে অতিবৃষ্টিপাতের ফলে গার্ডেনে পানি জমে গিয়ে প্রায় সব খেজুর গাছই মারা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার নাগরঘোপ গ্রামে খেজুর গাছ রিসার্চ গার্ডেনে ১২০টি খেজুরের চারা রোপণ করা হয়েছিল। গাছগুলো বড় হলে প্রতিদিন ৯ থেকে ১৪ লিটার পর্যন্ত রস পাওয়া সম্ভব ছিল। সৈয়দ নকিব মাহমুদ গাছগুলোর নামকরণ করেছিলেন রসবতী-১, রসবতী-২, ইত্যাদি। এখানে মোট ৮ ধরনের খেজুর গাছ ছিল, কিন্তু এবারের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বাগানে পানি জমে গিয়ে সব গাছ প্রায় মারা গেছে। বর্তমানে সেখানে মাত্র ৯টি গাছ বেঁচে আছে।
বিজ্ঞাপন
সৈয়দ নকিব মাহমুদ বলেন, খেজুর গাছের চারা ৪০ দিন পর্যন্ত পানিতে বেঁচে থাকতে পারে, কিন্তু ১০০ দিন নয়। বর্তমানে গার্ডেনে প্রায় দুই বিঘা জমি পানিতে ডুবে আছে। তিনি আরও জানান, ‘তবে আমি যে ৮টি ভিন্ন জিনোম সিকোয়েন্স-এর গাছের ব্যাকআপ গার্ডেনে রেখেছি, সেগুলি বিভিন্ন জায়গায় থাকা কারণে ভবিষ্যতে গবেষণা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। নতুন করে এই গার্ডেনটি পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠা করা আরও সময়সাপেক্ষ হবে, কারণ আমার কাছে যে গাছগুলো রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে মাত্র ৪টি মাতৃগাছ জীবিত আছে, বাকি ৪টি মারা গেছে।’
তিনি আরও বলেন, "যদিও আমার কাছে ৮ ধরনের গাছই রয়েছে, তবে সেগুলি বয়সে অনেক ছোট।" প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এই কাজ এগিয়ে নেওয়া তার পক্ষে কঠিন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, ‘এ বছর প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে খেজুর গাছ রিসার্চ গার্ডেনটি জলাবদ্ধতার কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছগুলো রোপণের সময়ই জমি উঁচু করে রোপণ করা উচিত ছিল। তবে, কয়েকবার মাটি ভরাট করে গাছগুলো রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে। যে গাছগুলো বেঁচে আছে, সেগুলো রক্ষা এবং নতুন গাছ রোপণের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে।’
প্রতিনিধি/একেবি