সাতক্ষীরায় নেশার টাকা জোগাড় করতে ভাতিজির স্বর্ণের দুল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে রেজোয়ান কবির জনি নামে এক যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে জনি।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আগরদাড়ি গ্রামে। নিহত স্কুলছাত্রী নুসরাত জাহান রাহি (৯) আগরদাড়ি গ্রামে রবিউল ইসলামের মেয়ে। অভিযুক্ত রেজোয়ান কবির জনি একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক সরদারের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, নিহত স্কুলছাত্রী নুসরাত জাহান রাহি সম্পর্কে অভিযুক্ত রেজোয়ান কবির জনির ভাতিজি। জনি ইতোপূর্বে ঢাকার একটি লিফট কোম্পানিতে চাকরি করতো। চাকরি করাকালীন একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক করে ৯ মাস আগে বিয়ে করে। বিগত ৪/৫ মাস আগে জনির চাকরিটি চলে যাওয়ায় সে ঢাকা থেকে বাড়িতে চলে আসে। জনির চাকরি না থাকার কারণে সে অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগছিল এবং নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তার বাবার কাছে বিভিন্ন সময় টাকা চেয়ে না পেয়ে সে বিকল্প চিন্তা করে। সে ভুক্তভোগী নূসরাত জাহান রাহির কানের এক জোড়া স্বর্ণের রিংয়ের কথা মনে পড়ে।
বিজ্ঞাপন
![]()
তিনি বলেন, শনিবার সকালে নূসরাত জাহান রাহি তার বান্ধবী মিতা বসুর (৮) বাড়ির সামনে খেলা করছিল। এসময় জনি তাকে মোড়ে যাওয়ার নাম করে ডাক দিয়ে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে যাওয়ার সময় মাওলানা মো. সোলাইমান আজিজীর পুকুরের পাশে গিয়ে আসামি তাকে বলে চলো আমরা হলুদ তুলতে যাই। তারপর হলুদ ক্ষেতে গিয়ে ভুক্তোভোগীর কানের স্বর্ণের রিং জোড়া হাত দিয়ে খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। ভুক্তভোগী স্বর্ণের রিং জোড়া দিতে অস্বীকার করে এবং বাড়িতে গিয়ে মা-বাবাকে বলে দিতে চায়। একপর্যায়ে আসামি মো. রেজোয়ান কবির জনি ভুক্তভোগী নূসরাত জাহান রাহির কানের স্বর্ণের কানের রিং জোড়া জোরপূর্বক খুলে নেয় এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপরে তার লাশটা যেন কেউ খুঁজে না পায় তার জন্য রাহির গায়ে থাকা গেঞ্জি ছিঁড়ে হাত- পা বেঁধে হলুদ খেতের পাশে পুকুরে ফেলে দেয়।
পুলিশ সুপার বলেন, শনিবার দুপুরে আসামি কানের রিং জোড়া নিয়ে বুধহাটা বাজারে গিয়ে পলাশ জুয়েলার্সের দোকানে অজয় পাইনের কাছে নয় হাজার টাকায় বিক্রি করে। ইতোমধ্যে স্থানীয় লোকজন নূসরাত জাহান রাহির লাশ পুকুরে দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়। থানা পুলিশ দ্রুততম সময়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে থানা পুলিশ আসামি মো. রেজোয়ান কবির ও জনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে রেজোয়ান কবির জনি (২২) সব ঘটনা পুলিশকে খুলে বলে এবং রাহিকে হত্যার কথা স্বীকার করে। আজ হত্যা মামলায় তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. সজীব খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. আমিনুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও কালিগঞ্জ সার্কেল মো. আমিনুর রহমান, আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম, ডিআইও-১ মো. হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
প্রতিনিধি/এসএস

