রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গাংনীতে দিনে ২০ হাজার মণ কাঠ পুড়ছে ইটভাটায়

তোফায়েল হোসেন, মেহেরপুর
প্রকাশিত: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

গাংনীতে দিনে ২০ হাজার মণ কাঠ পুড়ছে ইটভাটায়

মেহেরপুরের গাংনীতে পৌরসভাসহ উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে অর্ধ শতাধিক ইটভাটা। ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এ যেন এক অসুস্থ প্রতিযোগিতায় মেতেছে ভাটার মালিকরা। ফলে উজাড় হচ্ছে এলাকার গাছপালা ও বনাঞ্চল।

462581927_444218625396497_5060985370846529758_n


বিজ্ঞাপন


পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও বৈধতা না থাকার পরেও চলছে অনেক ইটভাটা। সব ভাটাতেই নির্বিচারে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। কয়লার দাম বেশি হওয়ায় জ্বালানি হিসেবে কাঠকেই বেছে নিচ্ছেন ইটভাটার মালিকরা। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন ইটভাটার আশপাশে বসবাসকারী কোমলমতি শিশুসহ হাজারও মানুষ। তাছাড়া বনাঞ্চল উজাড় হওয়ার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য হারাচ্ছে।

462564170_552038194383834_110113554795467382_n

অধিকাংশ ইটভাটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে মানা হয়নি ইটভাটা স্থাপনের শর্তগুলো। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে চলতি বছরে শুরুর দিকে ৪৩টি ইটভাটায় গড়ে প্রতিদিন ২০ হাজার মণ কাঠ খড়ি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে। একই সঙ্গে ভাটার নির্দিষ্ট স্থানে মজুদ রাখা হয়েছে হাজার হাজার মন কাঠের খড়ি। কাঠের খড়ি সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে। আইনের তোয়াক্কা না করে কাঠখড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে পোড়ানো হচ্ছে ইট। আর এভাবেই চলতে থাকবে ইট পোড়ানোর পুরো মৌসুম।

Messenger_creation_29607920-3924-4154-B131-FDD2E3C937A4


বিজ্ঞাপন


ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ ও সংশোধনী ২০১৯ এ উল্লেখ করা হয়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে আধুনিক প্রযুক্তির ইটভাটা অর্থাৎ জিগজ্যাগ ক্লিন, হাইব্রিড হফম্যান ক্লিন, ভার্টিক্যাল শিফট ক্লিন, টানেল ক্লিন বা অনুরূপ উন্নততর কোনো প্রযুক্তির ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া ইটভাটা শুরুর ও প্রথমে পরিবেশ অধিদফতর থেকে ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের অনুমোদন বা লাইসেন্স না নিয়ে ইটভাটা চালু করা যাবে না।

462579468_1805394389865643_7919648684705060381_n

অমান্য করলে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও উপেক্ষিত হচ্ছে এ আইনের বাস্তবায়ন। ফলে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জড়িয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন।

462581927_444218625396497_5060985370846529758_n

গাংনী ইটভাটা মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস ব্রিকসের মালিক চঞ্চল বিশ্বাস জানান, চলতি বছরে গাংনীতে ৪৩টি ইটভাটা রয়েছে। কোনোটারই লাইসেন্স নেই। ২০১৩ সালের পর থেকে সরকার লাইসেন্স দিচ্ছে না। তাই সবদিক ম্যানেজ করেই আগে যেভাবে চালানো হতো এ বছরও সেভাবেই ইটভাটাগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

পটুয়াখালীতে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্য আটক

এদিকে এ এলাকার ৬টি পরিবেশ বান্ধব হাওয়া ভাটা রয়েছে। একটির মালিক জয়নাল আবেদীন জানান, আমি ২০১৭-১৮ সালে পরিবেশ ছাড়পত্র নিয়ে ব্যবসা শুরু করি। হাওয়া ভাটায় খরচ বেশি হওয়ায় ফিট ভাটা ব্যবসার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে।

465557405_2033552010431818_9201735732986566963_n

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, আইন উপেক্ষা করে যেসব মালিক ইটভাটা পরিচালনা করে চলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ওই ইটভাটাগুলোতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর