রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

অটো রাইস মিলের দাপটে বন্ধ হচ্ছে বগুড়ার হাস্কিং মিল

পারভীন লুনা, বগুড়া
প্রকাশিত: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৮ পিএম

শেয়ার করুন:

অটো রাইস মিলের দাপটে বন্ধ হচ্ছে বগুড়ার হাস্কিং মিল

শস্য ভান্ডার খ্যাত উত্তর অঞ্চলের জেলা বগুড়া। আর এই জেলার প্রধান ফসল ধান। ধান থেকে উৎপন্ন চাল স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আর এ কারণেই বগুড়া জেলায় গড়ে উঠেছিল দুই হাজারের বেশি হাস্কিং চাল কল। তবে আধুনিকায়নের এই যুগে অল্প সংখ্যক অটো রাইস মিলের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রাইস মিলগুলো। লোকসানের মুখে ইতোমধ্যে এক হাজারের বেশি হাস্কিং মিল বন্ধ হয়ে গেছে।

thumbnail_IMG20241105114650


বিজ্ঞাপন


এক সময় ধান সিদ্ধ, শুকানো এবং চাল তৈরির কাজে সারাবছর হাস্কিং চাল কলগুলোতে কর্মব্যস্ততা ছিল। নারী-পুরুষ শ্রমিক দিনরাত কাজ করতো চাল কলে। সেই কর্মব্যস্ত  মিলগুলোর অধিকাংশই এখন জীর্ণদশা।

আদমদীঘি উপজেলার হাস্কিং চালকল মালিক জয়নাল আবেদিন জানান, অটো রাইস মিলগুলো দিনে তিন হাজার মেট্রিক টন ধান থেকে চাল উৎপন্ন করতে পারে। সেখানে হাস্কিং চাল কলগুলোতে ১০ টনের বেশি ধান থেকে চাল উৎপন্ন করা যায় না।

thumbnail_IMG20241105114757

উৎপাদন ক্ষমতার এই বিশাল ব্যবধানের কারণে তাল মেলাতে না পেরে ও মূলধন হারিয়ে একের পর এক  মিল ও  চাতাল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালোড়া অটোমেটিক রাইসমিল মালিক সুভাষ প্রসাদ কানু বলেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে আকার অনুযায়ী ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় করলেই হাস্কিং মিলে চাল উৎপন্নের পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদিত চালের মানও উন্নত হবে।

ব্যবসায়িরা বলছেন, সরকারি গুদামে ধান-চালের দাম বাজারে চেয়ে কম হওয়া, অটোরাইসমিলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারা ও চড়া সুদে ব্যাংক ঋণসহ নানাকারণে হাস্কিং বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

thumbnail_IMG20241105114703

বগুড়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি এটিএম আমিনুল হক বলেন, গত চার বছরে দুই হাজার ৩৫টির মধ্যে এক হাজারের বেশি হাস্কিং মিল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মিল মালিকসহ প্রায়  ১৫ হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থান হারিয়েছেন।

আরও পড়ুন

পিরোজপুরে মাছের বাজার গরম, ক্রেতাদের ক্ষোভ

হাস্কিং চালকলগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে অটো রাইস মিলগুলোকে দায়ী করে তিনি বলেন, অটো রাইস মিলগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা বেশি। একারণে তারা সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করে থাকে চাহিদা মতো। কিন্তু হাস্কিং মিলগুলো চাল সরবরাহ করতে কেজি প্রতি লোকসান হয় ৫ থেকে ৬ টাকা। আবার সরকারি খাদ্য গুদামে চাহিদামতো চাল সরবরাহ না করলে লাইসেন্স বাতিল করা হয়। এসব কারণে প্রতি বছরই হাস্কিং মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

thumbnail_IMG20241105114642

বগুড়ার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, হাস্কিং মিলগুলো অটোমেটিক মিলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। একারণেই মুলত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হাস্কিং মিলগুলো চালু রাখার জন্য চালকল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা দিলে তাদের প্রস্তাবনা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর