গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রতনপুর এলাকায় তালাক দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ঘুমন্ত স্ত্রী ও শাশুড়ির শরীরে আগুন দিয়েছেন তানভীর আহাম্মেদ নামে এক যুবক। আগুনে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মৃত্যু হয় স্ত্রী-শাশুড়ির।
স্ত্রী মোর্শেদা বেগম বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল ১০টায় ও শাশুড়ি ফুলজান বেগম একই দিন রাত ৮টায় মৃত্যুবরণ করেন বলে জানিয়েছেন কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ। নিহত মোর্শেদা বেগম (২২) নাটোর সদর উপজেলার লক্ষীপুরা এলাকার মুকুল আলীর মেয়ে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: পদ্মানদী থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সদর এলাকার তানভীর আহাম্মেদের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে নাটোর সদরের লক্ষ্মীপুরা এলাকার মুকুল আলীর মেয়ে মোর্শেদা বেগমের বিয়ে হয়। তারা স্বামী-স্ত্রী কোনো কাজ করতেন না। মা ফুলজান বেগম একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার কাজের কারণে মা-মেয়ে উপজেলার রতনপুর এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পারিবারিক কলহের জেরে কয়েক মাস ধরে তানভীর তাদের সঙ্গে থাকতেন না। এরই মধ্যে স্ত্রী তাকে তালাক দেন। তালাকের খবর পেয়ে তানভীর গত বুধবার রাতে ওই ভাড়া বাড়িতে যান। একপর্যায়ে ঘরের জানালা দিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রী ও শাশুড়ির গায়ে আগুন ধরিয়ে ঘরের বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
মা ও মেয়ের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোর্শেদা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। ফুলজান বেগমকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তিনিও মারা যান।
আরও পড়ুন: ফতুল্লায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা
বিজ্ঞাপন
রতনপুর এলাকার স্থানীয় বাড়ির মালিক মো. পারভেজ জানান, তারা তিনতলায় থাকেন, আর মা-মেয়ে থাকেন টিনশেড রুমে। রাতে চিৎকার শুনে টিনশেড রুমে গিয়ে দু’জনকে দগ্ধ অবস্থায় পান। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকায় পাঠানো হয়। দগ্ধ অবস্থায় চিৎকার করে মোর্শেদা বারবার বলছিলেন, ‘আমার স্বামী আগুন দিয়েছে। আমার মাকে বাঁচান আপনারা।’
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ‘আগুনে দগ্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মোর্শেদা বেগম ও রাত ৮টায় একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মা ফুলজান বেগম মারা যান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী তার স্ত্রী ও শাশুড়ির গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
প্রতিনিধি/ এমইউ