আম গাছে ঝুলছিল বৃদ্ধের নিথর দেহ

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উজানচর এলাকার একটি আম গাছ থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এবং ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে পারছিলেন না। শারীরিকভাবেও অসুস্থ থাকার পাশাপাশি ঋণের কিস্তির জন্য এনজিও কর্মীরা তাকে চাপ দিতো। এসব কারণে তিনি হতাশাগ্রস্ত ছিলেন।

উজানচর ইউনিয়ন জাকের পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, ইউনুস খাঁ আজ ভোর পৌঁনে পাঁচটার দিকে আমাকে ফোনে জানান, তিনি পাংশার মাছপাড়া আছেন। প্রতিবেশী মোমিন মণ্ডলের বাড়ির পেছনে জঙ্গলে কেউ আত্মহত্যা করেছে। পরিবারসহ ছোট ভাই বিল্লালকে খবরটি দিতে বলেন। সকাল সাতটার দিকে পরিবারকে খবর দিয়ে দিই। তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। পরে পরিবারের লোকজন মাঠের আম গাছের সঙ্গে ইউনুস খাঁর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

সরেজমিনে দেখা যায়, গোয়ালন্দ-ফরিদপুর আঞ্চলিক সড়কের প্রায় ৩০০ গজ পশ্চিমে ফসলি মাঠে স্থানীয় মোমিন মণ্ডলের আমগাছের ডালে গলায় গামছা প্যাঁচানো ইউনুস খাঁর মরদেহ ঝুলে আছে। অপর ডালে পলিথিনের পোঁটলায় কিছু কাপড় রয়েছে। উৎসুক মানুষ দেখতে ভিড় করেছেন। বাড়িতে তার স্ত্রী, মেয়ে ও অসুস্থ ছেলে রয়েছে।

ইউনুসের মেয়ে শাহনাজ পারভীন মীম বলেন, বাবা মালামাল কিনতে বুধবার ও শনিবার হাট করেন। বুধবার সকালে বাড়ি থেকে বাজারের উদ্দেশে বের হন। বেলা ১১টার দিকে ফোনে জানান, বাজারে আছি, আসতে দেরি হবে। বেলা তিনটার পর থেকে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, ব্র্যাক, আশা, সাজেদা ফাউন্ডেশন, এসডিসি, পিপিসহ কয়েকটি এনজিও থেকে প্রায় সাত লাখ টাকার মতো এবং ব্যাংক থেকেও ঋণ নেওয়া ছিল। কিস্তির টাকার জন্য এনজিও থেকে চাপ দিত। টাকা জোগাড় করতে না পেরে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি রাকিবুল ইসলাম জানান, আমগাছের ডালে গলায় গামছা প্যাঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় জাকের পার্টির সভাপতির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঋণগ্রস্ত হওয়ায় এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিনিধি/এসএস