কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে খালেদা বেগম নামে এক বিধবা নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন ও গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলার দৌলখাঁড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
ওই নারীকে প্রথমে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ওই নারী দৌলখাঁড় গ্রামের মৃত দুলাল মিয়ার স্ত্রী।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা বেগম বলেন, গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাড়িতে আমি একাই ছিলাম। মেয়েরা ছিল কুমিল্লায়। বাড়ির জয়নাল ফরায়েজি ও তার আত্মীয়-স্বজনরা আমাদের গাছের জাম্বুরা ও নারকেল পেড়ে নিচ্ছিল।
আমি বাধা না দিয়ে এ দৃশ্য ভিডিও করার চেষ্টা করি। এটি তারা দেখে ফেলে। এরপর জয়নাল ফরায়েজি, তার ভাই মিজান, জামাল, মেয়ের জামাই আবদুল কুদ্দুস, ভাতিজা মেহেদী হাসানসহ আরও ১০ থেকে ১৫ জন আমার ওপর হামলা চালায়। প্রথমে তারা আমাকে তাদের ঘরের সামনে নিয়ে লাঠিপেটা করে। তারা সবাই ছিল সংঘবদ্ধ। আমি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ভয়ে কেউ এগিয়ে আসে না। এক পর্যায়ে তারা আমাকে পুরো উঠানে টানাহেঁচড়া করতে থাকে। টানাহেঁচড়া করার পর তারা আমাকে একটি নারকেল গাছের সঙ্গে বাঁধে। সেখানে গলায় চাকু দিয়ে অসংখ্যবার আঘাত করে জয়নালের মেয়ে জামাই আবদুল কুদ্দুস। মারার সময় তারা বলতে থাকে, ‘মামলা যখন খাব, একেবারে মেরেই ফেল।’ এরপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। খবর পেয়ে শহর থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর এসে মেয়ে ও মেয়ের সহপাঠীরা, পার্শ্ববর্তী কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। ওরা আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এখনও মোবাইল ফোনটি ফেরত দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর গত ১১ বছর ধরে জয়নাল আমাকে নানাভাবে নির্যাতন ও হয়রানি করে আসছে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, আহতের পুরো শরীরে অসংখ্য জখম রয়েছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে অনেক সময় লাগবে।
অভিযুক্ত ডেকোরেটর ব্যবসায়ী জয়নাল ফরায়েজি বলেন, আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। শুনেছি বাড়িতে মহিলারা ঝগড়া করেছে।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম ফজলুল হক জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এসএস