নোয়াখালীতে ট্রাক শ্রমিক মো. খোকন (১৭) হত্যার অভিযোগে নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সোহেল, সহ- সভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন, সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন জেহানসহ আওয়ামী লীগের ৫৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২০০ জন।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিহত শ্রমিকের বাবা মজিবুল হক বাদী হয়ে সুধারাম মডেল থানায় এই মামলার এজাহার দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
মামলা সূত্রে জানা যায়, নিহত খোকন পেশায় একজন ট্রাক শ্রমিক ছিলেন। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি-জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি ও জামায়াতের কর্মী সমর্থকরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার জন্য সদর উপজেলার দত্তেরহাট দত্ত বাড়ির মোড়ে জমায়েত হন। খোকন তখন নিজের বাড়ি থেকে দত্তেরহাট শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। একপর্যায়ে খোকন সোনাপুর-মাইজদীর প্রধান সড়কে গেলে সাবেক এমপি একরামুল, সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুদ্দিন জেহান, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু, নোয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র শহীদ উল্যাহ খান সোহেল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন, আওয়ামী লীগ নেতা সিএনজি কামাল, পৌর কাউন্সিলর নাসিম উদ্দিন সুনাম, আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলামসহ অন্যান্য আসামিরা বিএনপি জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মিছিল দত্তেরহাট পোলের কাছাকাছি পৌঁছলে হত্যার উদ্দেশে অতর্কিত হামলা করে। তখন ১ থেকে ২০ নম্বর আসামিরা তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এলাপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকলে আমার ছেলে গুলিবিদ্ধ হয়।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, খবর পেয়ে নিহত শ্রমিকের বাবা ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা তাকে মারধর করে তার ছেলেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর তাকে মৃত ভেবে লাশ গুম করার জন্য ময়লা যুক্ত খালে লাশ ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। এরপর সুধারাম থানায় মামলা করতে গেলে আসামিদের রাজনৈতিক প্রভাবে পুলিশ নিহতের বাবা মামলা না নিয়ে পুলিশ নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রদান করে। মামলার বাদী অভিযোগ করেন, যার কারণে তিনি তার ছেলে হত্যার বিচার পাননি।
বিজ্ঞাপন
যোগাযোগ করা হলে সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করেন।
প্রতিনিধি/এসএস