মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

গাজীপুরে কালেজছাত্র হৃদয় হত্যার অভিযোগে কনস্টেবল গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি, গাজীপুর
প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৩ পিএম

শেয়ার করুন:

গাজীপুরে কালেজছাত্র হৃদয় হত্যার অভিযোগে কনস্টেবল গ্রেফতার

গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় প্রকাশ্যে পুলিশের গুলিতে কলেজছাত্র মো. হৃদয় হত্যার ঘটনায় আকরাম হোসেন নামে এক কনস্টেবলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার বরুরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম।


বিজ্ঞাপন


শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাকে গাজীপুর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নিহত মো. হৃদয় টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার উত্তর আলমনগর এলাকার মো. লাল মিয়ার ছেলে। টাঙ্গাইলের হেমনগর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়ার পাশাপাশি গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ি পারিজাত এলাকায় আপন ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহিমের সঙ্গে থাকতেন হৃদয়।

ওসি শাহ আলম বলেন, গ্রেফতার কনস্টেবল আকরাম গাজীপুরে শিল্প পুলিশে কর্মরত ছিলেন। হৃদয় হত্যার ভিডিও দেখে কনস্টেবল আকরাম হোসেনকে শনাক্ত করা হয়। পরে  কোনাবাড়ি থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে ১০ দিনের  রিমান্ড চাওয়া হয়।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় গত ৫ আগস্ট বিকেলে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ি থানা এলাকায় পুলিশ সদস্যরা হৃদয়কে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত হৃদয়ের ফুফাতো ভাই ইব্রাহিম বাদী হয়ে কোনাবাড়ি থানায় গত ২৭ আগস্ট একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন

পঞ্চগড়ে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ: চার কিশোর কারাগারে

এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হককে।

এছাড়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ ৫৭ জন। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ২৫০- ৩০০ জনকে। এ ছাড়াও হৃদয় হত্যার ঘটনায় দৈনিক সমকালের কালিয়াকৈর প্রতিনিধি এম তুষারী, বাংলা টিভির গাজীপুর প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম, সকালের সময়ের কোনাবাড়ি প্রতিনিধি মোকলেছুর রহমান ও ভোরের ডাকের গাজীপুর প্রতিনিধি এম এম মমিন রানাকে আসামি করা হয়।

মামলার বাদী এজাহারে অভিযোগ করেন, তিনি এবং তার  মামাতো ভাই দুজনই গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর কোনাবাড়ী রোডে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। হৃদয় গত ৫ আগস্ট কোনাবাড়ির  এঞ্জেল গেইট সংলগ্ন রাস্তার ওপর অবস্থান করছিল। ওই সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র জনতা কোনাবাড়ী থেকে কাশিমপুর রোডে অবস্থান করে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেয়। ওই সময় সাবেক মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান ও সাবেক সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়। এসময় হৃদয় প্রাণ ভয়ে পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নেয়। এর কিছুক্ষণ পরেই পুলিশ সদস্যরা হৃদয়কে দোকান থেকে জোরপূর্বক টানা হেঁচড়া করে রাস্তার ওপরে নিয়ে যায়। পরে  তাকে পুলিশ সদস্যরা ঘেরাও করে আগ্নেয়াস্ত্র পেটের মধ্যে ঠেকিয়ে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ গুম করে। যা মামলার বাদী  ও আশপাশের লোকজন ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তী সময় সেই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর