মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

পঞ্চগড়ে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ: চার কিশোর কারাগারে

জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড়
প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ পিএম

শেয়ার করুন:

পঞ্চগড়ে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ: চার কিশোর কারাগারে

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৪ বছর বয়সী এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে চার কিশোর-তরুণের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় তাদেরকে গ্রেফতার করে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতে পাঠিয়ে দেয় তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ।


বিজ্ঞাপন


এর আগে তাদেরকে শুক্রবার দিবাগত রাতে পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযানে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার তরুণরা হলো- নাহিদ হাসান (১৭), সাব্বির হোসেন (১৯), রেদওয়ান হোসেন রতন (১৭) ও মো. আব্দুল্লাহ (২০)।

thumbnail_VideoCapture_20240907-181739

এদের মধ্যে নাহিদ হাসান তেঁতুলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের  দর্জিপাড়া (বাগানপাড়া) গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে, সাব্বির হোসেন একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে, রেদওয়ান হোসেন রতন দর্জিপাড়ার আব্দুল জলিলের ছেলে ও  একই গ্রামের একই এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে আব্দুল্লাহ।


বিজ্ঞাপন


ধর্ষণের অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার ও ধর্ষণের মূল রহস্য উৎঘাটন নিয়ে শনিবার বিকেলে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিং করেন।

পুলিশ সুপার জানান, গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাতটার দিকে তেঁতুলিয়া বাজারে অবস্থান করেন ভুক্তভোগী ওই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারী। সেদিনই ধৃত আব্দুল্লাহ তাকে ফুসলিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে দর্জিপাড়ার বুড়াঠাকুর নামের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে দুথচালা টিনের ঘরে রাখে। পরের দিন শুক্রবার আব্দুল্লাহ ফরেস্টে তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর তাকে খাবার আনার কথা বলে তাকে রেখে পালিয়ে যায়।

আরও পড়ুন

সাবেক এমপি বদিকে চট্টগ্রাম কারাগারে স্থানান্তর

একই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভুক্তভোগীকে ঘটনাস্থলে পেয়ে নাহিদ হাসান ও সাব্বির হোসেন ধর্ষণ করে। পরে তারা ওই নারীকে রেখে তার জন্য তেঁতুলিয়া বাজার থেকে খাবার নিয়ে আসার সময় রেদওয়ান হোসেন রতনের সঙ্গে দেখা হয়। তারা তিনজনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগীকে খাবার খাওয়ায়ে রতনের হাওলায় নাহিদ ও সাব্বির কৌশলে চলে যায়। পরে দুপুর দুইটার দিকে রতন ওই নারীকে ধর্ষণ করে। এরপর রতন ওই নারীকে মাগুড়া মোড় এলাকায় রেখে সেও পালিয়ে যায়। পরে ওই নারী মাগুড়া মোড় হইতে তেঁতুলিয়া বাজার পর্যন্ত ঘোরাফেরা করতে থাকলে স্থানীয় লোকজন তাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

ঘটনাটি জানার পর পঞ্চগড় পুলিশ সুপার সিরাজুল হুদার নির্দেশক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কনক কুমার দাস, আমিরুল্লাহ (সদর সার্কেল) ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় পুলিশ ও বিজিবির যৌথ অভিযানে অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে আটক করা হয়। থানায় হেফাজতে আনার পর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর চাচা নিরঞ্জন চন্দ্র রায় ঘটনার বিস্তারিত শুনে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৯ (৩) ধারায় মামলা রুজু করেন। বিকেলে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এদিকে ভুক্তভোগী নারীকে পরীক্ষা করতে জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

নেত্রকোনায় যৌথ অভিযানে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার, আটক ৫

তবে এদিকে আটক হওয়া চারজনের পরিবারের অভিযোগ, তাদেরকে অন্যায়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের নামে গভীর রাতে বাড়িতে তুলে এনে আটক দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেছে। কারণ হিসেবে তারা জানান, যে নারীর কথা বলা হচ্ছে সে একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারী। যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে শুধু আব্দুল্লাহর প্রতি অভিযোগ করেছেন। তাহলে কেন অন্যায়ভাবে আমাদের সন্তানকে গ্রেফতার করা হলো। বিষয়টি নিয়ে তারা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তেঁতুলিয়া মডেল থানায় আটক হওয়া সাব্বির হোসেনের চাচা ইসমাইল হোসেন কাফনের কাপড় পড়ে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানান। একই সঙ্গে অন্যান্য আটকদের পরিবারও থানায় তাদেরকে ছেড়ে দিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। উত্তেজিত পরিস্থিতির খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যদের উপস্থিতিতে আটকদের জেলা কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর