সাভারের আশুলিয়ায় ভাড়া বাসায় বিছানার ওপর মৃত অবস্থায় পড়ে ছিল স্ত্রী আর ঘরের সিলিংয়ে ঝুলছিল স্বামীর নিথর দেহ। খবর পেয়ে মরদেহ দু’টি উদ্ধার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
সোমবার (২০ মে) বিকেলে আশুলিয়ার নরসিংহপুরের ইউসুফ মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
বিজ্ঞাপন
নিহতরা হলেন- পটুয়াখালী সদর থানার লোহালিয়া ইউনিয়নের হাকিম আলী হাওলাদারের ছেলে রুহুল আমিন হাওলাদার (৪০) এবং বরিশালের আমতলী থানার সোবহান মৃধার মেয়ে মনি ওরফে মনিরা (২৭)।
রুহুল আমিন পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী এবং মনি বেগম গৃহিণী।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর স্বামী আত্মহত্যা করেছে। নিহত রুহুল আমিনের মরদেহের পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে বলেও জানায় পুলিশ।
আরও পড়ুন
চিরকুটে রুহুল আমিন লিখেছেন, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। আমি মো. রুহুল আমিন, থানা পটুয়াখালী ও জেলা পটুয়াখালী। অতি কষ্টের সঙ্গে জানাই- আমতলি নিবাসী ও বাওনা গ্রাম মো. ছোবাহান মৃধার ছোট মেয়ে মনিরার সঙ্গে আমার বিবাহ হয়। বিবাহের বয়স ৭ মাস। বিয়ের রাত থেকে মনিরার ফোনে ফোন আসতে থাকে। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জানতে পারি ডিসার সুয়েটারে মনিরা ও তার বড় বোন ফাহিমা চাকরি অবস্থায় বিভিন্ন ছেলের সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয় দুই বোন। আমি বাধা দিলে তার বোন ফাহিমা বাসায় ডেকে নিয়ে আমাকে ভয় দেখায় যে এই নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তোকে মেরে ফেলব। ফাহিমার স্বামীও জেনে ফাহিমাকে ছেড়ে দিয়েছে। তারা অনৈতিক কাজ করে টাকা কামাই করে, চাকরি তাদের শো। এবং আমাকে ভয় দেখিয়ে ইউসুফ মার্কেট কাপড়ের দোকান দিতে বাধ্য করায় সেখানে আমার ৬ লাখ টাকা নষ্ট করে। আর আমাকে ভয় দেখিয়ে দুই বোন অনৈতিক কাজ করে পরে আমি জানতে পারি মনিরার আরও ২টা বিয়ে হয়েছে। সেখান থেকে মনিরার ছাড়াছাড়ি হয়। তা আমার কাছে গোপন রাখে, পরে আমি জানতে পারি। ফাহিমার কাছে আমি ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার হিসেবে পাওনা আছি। টাকা চাইতে গেলে আমাকে বাসায় ডেকে নিয়ে অপমান করে এবং তার বোনকে আটকিয়ে রাখে। আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী ফাহিমা, ফাহিমা। ইতি, মৃত্যু পথের পথিক। আমাকে সবাই ক্ষমা করে দিবেন।’
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত স্বামীর বুক পকেট থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। তদন্তের পরই প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে। এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
প্রতিনিধি/এসএস

