গাজায় ইসরায়েলের চলমান সন্ত্রাসী আগ্রাসনের প্রতিবাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সংহতি ও স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে ফিলিস্তিনের শিশুসহ নারী-পুরুষদের ওপর ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন এবং বোমা হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।
সোমবার (৬ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক একাত্মতা পোষণ করেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে জগন্নাথে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
সমাবেশে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহায়ির ইসলাম বলেন, ‘এই আমেরিকা গণতন্ত্র, নারীর অধিকার ও বিশ্বের শান্তি-শৃঙ্খলার কথা বলে। কিন্তু, এখন সেই আমেরিকা হয়ে উঠেছে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট দেশ। ৭০ দশকের অনেক আন্দোলনে আমরা দেখেছি যে শিক্ষার্থীরা সক্রিয় অবস্থান নিলে সেখানে মানবতার কথা বলে তারা আন্দোলনে সাহায্য করেছে, সংহিত প্রকাশ করেছে। কিন্তু এখন ফিলিস্তিনের পক্ষে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ার কারণে তাদেরকে পুলিশ দিয়ে প্রতিহত করছে আমেরিকান প্রশাসন। এ পর্যন্ত তিন শতাধিক শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আমেরিকা ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তানে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এখন তারা সাধারণ নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করতে চায়।’
রাবি শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ওয়াজেদ বলেন, ‘আজ আমরা কথা বলব ৭৫ বছরের এক রক্তভেজা ভূখণ্ড ফিলিস্তিনকে নিয়ে। এতগুলো বছর ধরে সেখানে লঙ্ঘিত হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার। এর পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট রাষ্ট্র ইসরায়েল।’
আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসুদ বলেন, ‘আমরা শুধু ইহুদিদেরকেই ঘৃণা করি, অথচ তাদের পিছনে যে শক্তি কাজ করে - তাদেরকে খেয়াল করি না। আজ তারা উলঙ্গ হয়ে গেছে তাদের নিজ দেশের জনগণের সামনে। আজ আমেরিকায় শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন। নদীকে যখন স্বাভাবিক অবস্থায় বাঁধা দেওয়া হয় তখন সে ভেঙেচুরে চলে আসে, তেমনি ইতিহাস সাক্ষী যে ফিলিস্তিন ভালো না থাকলে পুরো পৃথিবী ভালো থাকে না।’
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে ছাত্রলীগের সংহতি প্রকাশ
তিনি আরও বলেন, মুসলিম বিশ্বের শাসকেরা আজ ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে সরে এসে জায়নবাদীদের পক্ষ নিয়েছে। আজকে ফিলিস্তিনের এই সমস্যাকে কোনো ধর্মীয় গণ্ডির মধ্যে রাখলে চলবে না, মানবতার দৃষ্টি দিয়ে বিচার করতে হবে। ইসরায়েল তৈরি হয়েছে কোনো রাষ্ট্রের সংজ্ঞা ছাড়াই, হুট করে জায়গার নাম পাল্টে একটা অবৈধ রাষ্ট্র তৈরি করা হয়েছে। এটি কোনো রাষ্ট্রই নয়। এ কারণে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন সব জায়গায় ছড়িয়ে দিতে হবে।
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, কলম্বিয়া একটি অমুসলিম দেশ হলেও ইসরায়েলের সঙ্গে সব সম্পর্ক শেষ করেছে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে আমাদেরকেও কাজ করতে হবে।
এ সময় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
প্রতিনিধি/ এমইউ