শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ঢাকা

ওষুধের দোকান বন্ধ রেখে নওগাঁয় সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট, ভোগান্তি

জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: ০৫ মে ২০২৪, ০২:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

ওষুধের দোকান বন্ধ রেখে নওগাঁয় সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট, ভোগান্তি

ওষুধ প্রশাসনের দেওয়া হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদে নওগাঁয় ওষুধের দোকান বন্ধ রেখে সকাল-সন্ধ্যা ধর্মঘট পালন করছেন ব্যবসায়ীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে রোগীর স্বজনরা।

রোববার (৫ এপ্রিল) সকাল থেকে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি জেলা শাখার ডাকে পুরো জেলায় সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ধর্মঘট পালন করছেন তারা।


বিজ্ঞাপন


ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি রেজিস্ট্রেশন নেই এমন ওষুধ রাখার অভিযোগে নওগাঁ শহরের দুই ব্যসায়ীকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে নওগাঁ ওষুধ প্রশাসন। মামলার পর রাশেদুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে তার জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এর প্রতিবাদেই পুরো জেলায় এই ধর্মঘট চলছে। এ অবস্থায় ওষুধ ও কসমেটিক আইন সংশোধন করে দ্রুত হয়রানিমূলক মামলা ও নির্যাতন বন্ধ দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। তা না হলে অবিলম্বে আরও বৃহৎ আন্দোলন শুরু করার হুমকি দেন ওষুধ ব্যবসায়ীরা।

সংগঠনের জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাসুদ হায়দার টিপু বলেন, চিকিৎসকগণ ব্যবস্থাপত্রে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের পাশাপাশি কসমেটিক্স প্রোডাস্টস ও ফুড সাপ্লিমেন্টস লিখে থাকেন। ওষুধ ব্যবসায়ীগণ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ বিপণন করে। ওষুধ ব্যবসায়ীর কোনো অপরাধ না থাকলেও আমাদের দুইজন সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও রাশেদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে ওষুধ প্রশাসন মামলা করে। গত ১৬ এপ্রিল রাশেদুল ইসলাম আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেন। অপরজন আবুল কালাম আজাদ মামলার পর থেকে পলাতক রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মামলায় আসামির ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১০ বছর কারাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে। দীর্ঘ ৩৯ বছর পর ওষুধ ও কসমেটিক্স আইন ২০২৩ এর সংশোধন করে দ্রুত এসব হয়রানিমূলক নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। তা না হলে অবিলম্বে আরও বৃহৎ আন্দোলন শুরু করা হবে।

 

ওষুধ ব্যবসায়ী বজলুর রহমান বলেন, আমরা মানবসেবার ব্রত নিয়ে এ পেশায় এসেছি। কিন্তু ওষুধ প্রশাসন আমাদের সঙ্গে অবিচার করছে। অন্যায়ভাবে মামলা দিয়ে আমাদের সদস্যদের হয়রানি করছে। অন্যায়ের প্রতিবাদে দোকান বন্ধ রেখে রাস্তায় নেমেছি। এ কঠোর আইন সংশোধনের দাবি জানানা তারা।

নওগাঁ শহরের কোমাইগাড়ী মহল্লার বাসিন্দা মুনি আরা বলেন, এক বছরের ছেলে মুহিত গত কয়েক দিন বমি ও পাতলা পায়খানা করছে। হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর পর ভর্তি করে নেয়। একটি ব্যবস্থাপত্রে চারপদের ওষুধ লিখে দেয়। ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ওষুধ ব্যবসায়ীদের এসে দেখি সব দোকান। আধা ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন দোকানে গিয়েও ওষুধ পাওয়া যায়নি। পরে পরিচিত এক মাধ্যম দিয়ে ওষুধগুলো সংগ্রহ করা হয়। ওষুধের দোকানগুলো বন্ধ থাকায় আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

জেলার মহাদেবপুর উপজেলার চকগৌরি হাটের বাসিন্দা নিমাই চন্দ্র বলেন, গত কয়েকদিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আজ হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিয়েছে। ব্যবস্থাপত্র নিয়ে দোকানে এসে দেখি সবগুলো বন্ধ রয়েছে। আমার মতো অনেকেই ওষুধ নিতে এসে দোকান বন্ধ পেয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমরা দ্রুত এ সমস্যা সমাধান চাই।

বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতি নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি আতাউর রহমান খোকা বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসককে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর