চাঁদার টাকা ফেরত চেয়ে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল করিমের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ইউপি সদস্য।
পুকুর খননের অনুমতি দেওয়ার নামে আগের ইউএনও’র কথিত ব্যক্তিগত সহকারী রাকিবুল ইসলাম এক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছিলেন বলে এ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগকারীর নাম আবুল বাশার। তিনি উপজেলার দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড (বখতিয়ারপুর) সদস্য। এলাকায় মাছ চাষ করেন তিনি। গত ১০ অক্টোবর ইউএনও’র কাছে তিনি অভিযোগটি দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বখতিয়ারপুর গ্রামে মাছ চাষের জন্য পুরাতন পুকুর সংষ্কারের অনুমতি চেয়ে গত ৭ মার্চ তৎকালীন ইউএনও সোহেল রানার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেন এছার উদ্দিন ও সুরত আলী নামে দুই মাছ চাষি। এছাড়া ইউপি সদস্য আবুল বাশারও তার পুরাতন পুকুর সংষ্কারের জন্য পৃথক আবেদন করেন।
আবেদনের কপি দেখে গত ১১ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন রাকিবুল ইসলাম। ইউএন’র ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দিয়ে সেখানে পুকুর সংস্কারে ব্যবহৃত গাড়ি (এসকেভেটর) ভেঙে ফেলতে চান তিনি।
এসময় তিনি মাছ চাষিদের বলেন, ইউএনও স্যার গাড়ি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে ১ লাখ টাকা দিলে গাড়ি ভাঙচুর করব না। ফলে মাছ চাষিরা ১ লাখ টাকা দিয়ে রাকিবুল ও তার লোকজনকে ম্যানেজ করেন।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়দের অভিযোগ, আগের ইউএনও সোহেল রানার নাম ভাঙিয়ে অনেকবার মাছ চাষিদের কাছে চাঁদা দাবি করেছেন রাকিবুল। এছাড়া নানা সুবিধা দেওয়ার কথা বলে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করতেন তিনি। তবে ইউএনও সোহেল রানার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি। তার বদলির পর বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। এর আগে মুঠোফোনে রাকিবুল ইসলামের ঘুষ দাবির একটি অডিও ফাঁস হয়।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে অভিযোগকারী ইউপি সদস্য আবুল বাশার বলেন, দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে আমি ইউএনও স্যরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন, এটি তার এখতিয়ারের বাইরে। তাছাড়া এটা ৬ মাস আগের ঘটনা। ৬ মাস পর এসে তিনি এটার বিচার করতে পারবেন না। তবুও ঘটনার অনুসন্ধান চালানোর কথা বলে ইউএনও মৌখিক আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এ ইউপি সদস্য।
তবে অভিযুক্ত রাকিবুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো ঘুষ গ্রহণ করিনি। আমাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হচ্ছে।
জানতে চাইলে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিনিধি/এসএস