অর্থের অভাবে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে আপন ভাগ্নেকে গলায় রশি পেচিঁয়ে শ্বাসরোধে হত্যা পর অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রি করে দিয়েছেন মামা। পরে নিখোঁজের একদিন পর উদ্ধার করা হয় নিহত অটোরিকশাচালকের মরদেহ।
পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়। মাত্র ২০ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে অভিযুক্তরা।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় সিরাজদিখান থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সহকারী পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত।
তিনি বলেন, কোরআনে হাফেজ ছিলেন নিহত অটোরিকশাচালক নেকবর। বাড়ি থেকে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ছিনতাই করা হয় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাটি।
এরপর গত ২ অক্টোবর সোমবার সকাল ৭টার দিকে সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের খাসকান্দি এলাকায় একটি ইট ভাটার পাশে পানিতে ভাসমান অবস্থায় ডোবা থেকে অটোচালক নেকবর হোসেনের (২২) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই তোফাজ্জেল হোসেন সিরাজদিখান থানায় অজ্ঞাত ও বেশ কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর জড়িতদের সন্ধানে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ পরে ফোন কলের সূত্রধরে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রেফতার করে তিনজনকে।
বিজ্ঞাপন
পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে অভিযুক্তরা এরপর তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী উদ্ধার করা হয় ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হওয়া অটোরিকশাটি।
আরও পড়ুনঃ বড় ভাইয়ের দায়ের কোপে প্রাণ গেল ছোট ভাইয়ের
পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিহত নেকবরের আপন মামা চর গুলগুলিয়া এলাকার মৃত আরাফাত আলীর ছেলে জাবেদ (৩৭) ও তার ভাষ্য অনুযায়ী ঘটনায় সহযোগী হিসেবে একই এলাকার ভাড়াটিয়া ও যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কাঠালতলী এলাকার আলী আকবরের ছেলে রেজাউলকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রশির সন্ধান মেলে।
পরে পুলিশের কাছে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে, নিহত নেকবরের মামা জাবেদ জানান, তিনি পেশায় অটো-মিশুকের মিস্ত্রী ও অপর আসামি রেজাউল চালক এবং এই সূত্রে আসামিদের মধ্যে সু-সম্পর্ক রয়েছে।
নগদ অর্থের প্রয়োজনে দু’জনে মিলে পরিকল্পিতভাবে নেকবরকে হত্যা করে তার ব্যবহৃত অটোরিকশাটি ছিনিয়ে নিয়ে সিরাজদিখানের কৃষ্ণনগর এলাকার মৃত নুর ইসলামের ছেলে শাহাজালালের (২৭) কাছে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। ফলে মামলায় তাকেও আসামি হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও ছিনতাই করা অটোচালকের ক্রেতা শাহজালালের দেয়া তথ্য অনুযায়ী নারায়নগঞ্জ জেলার ডিগ্রিরচর এলাকা হতে ছিনতাই করা অটোর বিচ্ছিন্ন বেশ কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়। এরপর বুধবার দুপুরে গ্রেফতার আসামিদের মুন্সিগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়।
অটোরিকশাচালক নেকবর হোসেন সিরাজদিখাঁন উপজেলার চর গুলগুলিয়া এলাকার মৃত শাহজাহান মিয়ার ছেলে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে পুলিশ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ মুজাহিদুল ইসলাম সহ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের সাথে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা।
প্রতিনিধি/এসএস