খাগড়াছড়িতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত দু’মাসে খাগড়াছড়িতে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮৩ জনের বেশি। প্রতিদিন নতুন করে হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছে। অনেক ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে না এসে বাড়িতে চিকিৎসা করছেন। এই দিকে জুলাই থেকে আগষ্ট মাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
সোমবার (২১ আগস্ট) সকালে খাগড়াছড়ি সদর আধুনিক হাসপাতালের স্বাস্থ্যা শিক্ষাবিদ (পরিসংখ্যানবিদ অতিরিক্ত দায়িত্ব) ম্রাচিং চৌধুরী জানান, খাগড়াছড়িতে গত জুন মাসে ভর্তি হয়েছে ১০ জন। জুলাই মাসে শনাক্ত হয়েছে ৩৪ জন ভর্তি হয়েছে ২৭ জন। আগষ্ট মাসে ৪৫ জন ভর্তি হয়েছে এবং ৪০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। প্রতিদিন নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তবে ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা বলছেন, এখন পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পৌরসভার পক্ষ থেকে ৯ ওয়ার্ডসহ কোনো ইউনিয়নে এডিস মশা নিধনের কীটনাশক প্রয়োগসহ কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডের নালা ভর্তি অবর্জনায়।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, আক্রান্তদের বেশির ভাগই উপজেলার এলাকার। ইতোমধ্যে মাটিরাঙ্গা পৌর এলাকাকে ডেঙ্গু হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে।
ডেঙ্গু রোগের বিষয়ে সাবেক খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. শহীদ তালুকদার বলেন, ডেঙ্গু মূলত আফ্রিকা থেকে এসেছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি জমে থাকে সেইসব জায়গায় এডিস মশা ডিম পাড়ে। ফলে এডিস মশা বেড়ে গেলে ডেঙ্গু জীবাণু ছড়ায়। সেই জন্য এডিস মশা যেন না জন্মায় এর জন্য যেসব জায়গায় লার্ভা পাওয়া যায় ধ্বংস করতে হবে। না করলে ডেঙ্গুর পতন হবে না।
বিজ্ঞাপন
খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতিমাসে বাড়ছে। হাসপাতালে অধিকাংশ রোগী বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা। স্থানীয়দের সচেতন হতে হবে। এলাকার বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। আশা করছি বর্ষা মৌসুম চলে গেলে রোগীর সংখ্যা কমে যাবে।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মো. ছাবের বলেন, খাগড়াছড়িতে ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রতিমাসে বেড়ে চলেছে। আমরা সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্স ডেঙ্গু শনাক্তের জন্য কীট সরবরাহ করেছি। আক্রান্তদের আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন।
মশার বিস্তার ঠেকাতে মশক নিধন কার্যক্রম সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চেয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে বলছেন সিভিল সার্জন।
সাবেক খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. শহীদ তালুকদার বলেন, সমতল ভূমির মতো এখানে এডিস মশা জন্মানোর জন্য যত ধরনের পরিবেশ প্রয়োজন সবই বিদ্যমান। এখানে চারদিকে এডিস মশা বেড়ে যাওয়ার কারণে এখন ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে।
প্রতিনিধি/এসএস