ঈদুল আজহার প্রথম দিনে অনেকটা পর্যটকশূন্য পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার। বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাতেগোনা মাত্র কয়েক হাজার পর্যটককে সমুদ্র সৈকতে নামতে দেখা গেছে। আবার এরমধ্যে স্থানীয়দের সংখ্যা ছিল চোখেপড়ার মতো। তবে আগামীকাল (শুক্রবার) ঈদের দ্বিতীয় দিন কক্সবাজারে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা ও কলাতলী (সায়মন) পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটকের চেয়ে স্থানীয়দের ভিড় সবচেয়ে বেশি।
বিজ্ঞাপন
সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ জানান, কোরবানি শেষ করে মন সতেজ করতে চলে এলাম সমুদ্র দেখতে। বাড়ির একেবারে নিকটে সমুদ্রসৈকত হওয়া সত্বেও কোনোদিন শখের বসে এখানে আসা হয় না। আর ছুটির দিন, তাছাড়া ঈদ। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে বালুচরে চলে এসেছি।
ঢাকার মিরপুর থেকে ভ্রমণে আসা দম্পতি নুরুল করিম চৌধুরী ও মরিয়ম চৌধুরী বলেন, আমাদের বিয়ে হলো বেশিদিন হয়নি। অফিস থেকে ছুটি পাওয়া মাত্রই সময় নষ্ট না করে কক্সবাজার দেখতে এসেছি। আগামীকাল আমরা ইনানি ও হিমছড়ি সমুদ্র সৈকত এলাকায় ঘুরে দেখব। এখানে আনন্দ ও উল্লাসে কাটছে আমাদের সময়।
কক্সবাজার সৈকতে দায়িত্বরত বিচকর্মীদের দলনেতা মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, ঈদুল আজহার দিনে পর্যটক ও স্থানীয় দর্শনার্থী ভিড়ের সম্ভবনা মাথায় রেখে বিচকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের নজরদারি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বিকালের দিকে লাবণী, সুগন্ধ ও কলাতলী পয়েন্টে হাতেগোনা দর্শনার্থী সৈকতে নামে; যাদের ৯০ শতাংশ স্থানীয় দর্শনার্থী। এছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পর্যটক দেখা গেছে।
লাবণী পয়েন্ট ছাতা মার্কেটের চটপতি দোকানদার মুজিবুর রহমান বলেন, ঈদুল আজহার দিনে যেমনটি আশা করেছি তা মোটেও হয়নি। দুপুর থেকে দোকান খুলে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত মাত্র কয়েকজন ক্রেতা এসেছে।
বিজ্ঞাপন
একই কথা জানিয়েছেন সৈকতের ভ্রাম্যমাণ ঝালমুড়ি বিক্রেতা আবদু শুক্কুরও। তিনি বলেন, যে কিছু লোক দেখা গেছে তারা স্থানীয় হওয়ায় বেচাবিক্রি হয়নি। তবে আগামীকাল শুক্রবার থেকে বেশ কিছু পর্যটক আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, সাধারণত কোরবানির সময় ঈদুল ফিতরের মতো পর্যটক সমাগম হয় না। কারণ খুব বেশি ছুটি পাওয়া যায় না। এইবার ঈদুল আজহায় সরকারি ছুটি ছিল পাঁচদিন। সেজন্যে আমাদের টার্গেটও সীমিত পর্যায়ে থাকে।
কিন্তু এর মধ্যেও যে ব্যবসা হয় তা আশানুরূপ থাকে। আজকে ঈদের প্রথমদিন তাই কোরবানি নিয়ে মানুষ ব্যস্থ আছেন। আগামীকাল শুক্রবার থেকে জমে উঠতে পারে ব্যবসা বানিজ্য। ইতিমধ্যে অধিকাংশ হোটেলে ৫০-৬০ শতাংশ রুম অগ্রিম বুকিং সম্পন্ন হয়েছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন, ঈদে কক্সবাজার ছুটি কাটাতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এর জন্য কয়েক স্তরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। সমুদ্রসৈকত, মার্কেট, হোটেল-মোটেল জোন, পর্যটন স্পটগুলোয় যাতে পর্যটকরা নিরাপদ ও আনন্দের সাথে কাটাতে পারে তার জন্য কাজ করছে আমাদের টিম।
প্রতিনিধি/এইচই