ভবিষ্যতের আকাশপথে ভ্রমণের ধারণা আর কল্পনা নয়— চীন সেই ভবিষ্যতের দরজায় কড়া নাড়ছে। দেশটির একটি শীর্ষস্থানীয় এরোস্পেস কোম্পানি সম্প্রতি সফলভাবে পরীক্ষা করেছে এক নতুন ধরনের ইঞ্জিন, যার নাম ডেটোনেশন র্যামজেট ইঞ্জিন (Detonation Ramjet Engine)। এই ইঞ্জিন দিয়ে তৈরি বিমান পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পৌঁছে দিতে পারবে মাত্র কয়েক ঘণ্টায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন ইঞ্জিন একটি হাইপারসনিক প্রযুক্তি, যা শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বা তার বেশি গতিতে চলতে সক্ষম। সফল পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, এই ইঞ্জিন ব্যবহার করে বেইজিং থেকে নিউ ইয়র্ক যেতে সময় লাগবে মাত্র দুই ঘণ্টা।
বিজ্ঞাপন
প্রযুক্তির বৈপ্লবিক দিক
ডেটোনেশন র্যামজেট ইঞ্জিন একটি অত্যাধুনিক প্রপালশন সিস্টেম, যা জ্বালানির শক্তি আরও দক্ষভাবে ব্যবহার করে উচ্চগতির ধাক্কা (detonation) তৈরি করে। সাধারণ র্যামজেট বা স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিনের তুলনায় এটি-
কম জ্বালানি খরচে বেশি গতি দিতে পারে।
বিজ্ঞাপন
উড়ন্ত অবস্থায় জ্বালানি প্রজ্বলন ঘটিয়ে ধারণার বাইরে গতি অর্জন করতে পারে।
ভবিষ্যতের যাত্রীবাহী বিমান এবং মহাকাশ অভিযানের জন্য এক যুগান্তকারী সম্ভাবনা তৈরি করে।
সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
বিশ্লেষকদের ধারণা, এই সাফল্য শুধু প্রযুক্তিগত নয়, বরং ভূরাজনৈতিক প্রভাবও ফেলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে হাইপারসনিক রেসে চীন এখন আরও একধাপ এগিয়ে গেল। তবে একে ঘিরে রয়েছে কিছু চ্যালেঞ্জও—
প্রচণ্ড তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
যাত্রী নিরাপত্তা
আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি ও আকাশসীমা ব্যবস্থাপনা
আরও পড়ুন: বিমানের ইঞ্জিনে পাখি ঢুকলে কী হয়?
ভবিষ্যতের দিগন্ত
এই ইঞ্জিনের উন্নয়ন সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে, একদিন হয়তো ঢাকা থেকে লন্ডন, নিউ ইয়র্ক থেকে টোকিও—সবই হবে কয়েক ঘণ্টার ভ্রমণ। আর সেই দিন খুব দূরে নয়।
চীনের এই অভাবনীয় অগ্রগতি শুধু এক দেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য এক নতুন যুগের সূচনা।
এজেড