বিমান উড্ডয়ন বা অবতরণের সময় আকাশে পাখির সঙ্গে সংঘর্ষ প্রায়ই হয়। যাকে বলা হয় ‘বার্ড স্ট্রাইক’। যা বিমান চলাচলের জন্য একটি বড় ঝুঁকি। অনেক যাত্রী ভাবেন, এত বড় জেট ইঞ্জিনে একটি পাখি ঢুকলে বড়জোর শব্দ হবে। কিন্তু বাস্তবতা অনেক ভয়ঙ্কর হতে পারে।
কীভাবে ঘটে বার্ড স্ট্রাইক?
বিমান যখন রানওয়ে থেকে ছাড়ে বা অবতরণ করে, তখন এর গতি কম থাকে এবং এটি ভূমির কাছাকাছি থাকে— এই সময়টাতেই পাখিদের সঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। বিশেষ করে বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় যদি খোলা জলাশয়, খাদ্যস্তান বা গাছপালা থাকে, তবে সেখানে পাখির আনাগোনা বেশি দেখা যায়।
আরও পড়ুন: বিমানের ইঞ্জিনে কেন মুরগি ছুড়ে মারা হয়
বিমানের ইঞ্জিনে পাখি ঢুকলে কী হয়?
১. ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে
জেট ইঞ্জিনে প্রবেশ করা পাখির শরীর খুব দ্রুত ঘূর্ণায়মান টারবাইন ব্লেডে ধাক্কা খেয়ে বিস্ফোরণ বা ব্লেড ভেঙে যেতে পারে। এতে ইঞ্জিন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

২. বিমান ঝুঁকিতে পড়ে
এক বা একাধিক ইঞ্জিন অকেজো হয়ে গেলে বিমানের উড্ডয়ন বা অবতরণ ব্যাহত হয়। যদি রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের ঠিক পরেই এটি ঘটে, তাহলে জরুরি অবতরণ ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।
৩. অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে
পাখির শরীরের মাংস বা পালক ইঞ্জিনে ঢুকে জ্বালানির সঙ্গে বিক্রিয়া করে আগুন লাগাতে পারে, যা আরও বিপজ্জনক।

প্রতিরোধে নেওয়া হয় যেসব পদক্ষেপ
বিমানবন্দরে বার্ড কন্ট্রোল ইউনিট
পাখি তাড়ানোর জন্য শব্দ বোমা, লেজার গান, ড্রোন বা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা হয়।
বায়ু সেন্সর ও রাডার
কিছু উন্নত বিমানবন্দরে বার্ড ডিটেকশন রাডার বসানো হয়েছে যা পাখির উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে।

পরিবেশ ব্যবস্থাপনা
বিমানবন্দরের আশেপাশের জলাশয় বা আবর্জনা অপসারণ করা হয় যেন পাখি আকৃষ্ট না হয়।
বিমানের ইঞ্জিনে পাখি ঢোকা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। এটি যাত্রী, পাইলট ও বিমানের জন্য এক ভয়াবহ ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তবে আধুনিক প্রযুক্তি, অভিজ্ঞ পাইলট এবং নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা থাকায় এই ধরনের ঘটনা থেকে অধিকাংশ সময় বড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। তবুও, সতর্কতা ও সচেতনতাই এই ঝুঁকি কমানোর মূল চাবিকাঠি।
এজেড

