মোটরসাইকেল চালানোর সময় অনেক চালক এমন কিছু অভ্যাস গড়ে তোলেন যা বাইকের যান্ত্রিক অংশগুলোর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যানজটে দাঁড়িয়ে গিয়ারে রেখে ইঞ্জিন বন্ধ করা, গ্যারেজে এসে বাইক গিয়ারে রেখেই বন্ধ করা এবং পরের দিন একই অবস্থায় ক্লাচ ধরে সরাসরি ইঞ্জিন চালু করা— এসব অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে পারে। অনেকের মনে হয় এতে কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু বাস্তবে এটি ইঞ্জিন এবং গিয়ারবক্সের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করে।
বিজ্ঞাপন
গিয়ারে রেখে ইঞ্জিন চালু করলে কী হয়
গিয়ারে থাকা অবস্থায় ইঞ্জিন চালু করলে ইঞ্জিনের প্রথম ঘূর্ণনের চাপ সরাসরি ক্লাচ প্লেট এবং গিয়ারবক্সে পড়ে। ক্লাচ চেপে রাখা হলেও সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতা ঘটে না, ফলে ঘর্ষণ বৃদ্ধি পায় এবং ক্লাচ প্লেট দ্রুত ক্ষয় হতে থাকে। দীর্ঘমেয়াদে গিয়ারবক্সের দাঁতের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়, যা গিয়ার পরিবর্তনের সময় খটখট শব্দ বা কড়া অনুভূতি তৈরি করতে পারে। স্টার্ট মোটরও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি লোড নিতে হয়, ফলে এর আয়ুষ্কাল কমে যায়।

যানজটে বা গ্যারেজে গিয়ারে রাখা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ
বিজ্ঞাপন
যানজটে দাঁড়িয়ে গিয়ারে রেখে ইঞ্জিন বন্ধ করলে হঠাৎ স্টার্ট দিতে গিয়ে বাইক সামনের দিকে লাফিয়ে যেতে পারে। এতে ধাক্কা লাগার ঝুঁকি থাকে এবং ক্লাচের ওপর অযথা চাপ পড়ে।
আরও পড়ুন: RPM : বাইক ও গাড়ির আরপিএম আসলে কী?
একইভাবে, গ্যারেজে এসে গিয়ারে রেখেই বাইক বন্ধ করলে গিয়ার দাঁতের ওপর স্থায়ী চাপ তৈরি হয়, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গিয়ার পরিবর্তন কঠিন করে এবং গিয়ারবক্স ক্ষয় বাড়ায়। পরের দিন ক্লাচ চেপে স্টার্ট দিলে প্রথম ঘূর্ণনের ধাক্কা আরও বেড়ে যায় এবং ইঞ্জিন ঠিকভাবে ঘোরে না।
নিরাপদ পদ্ধতি
সঠিক পদ্ধতি হলো স্টার্টের আগে সবসময় নিশ্চিত হওয়া যে বাইক নিউট্রাল গিয়ারে আছে। নিউট্রাল গিয়ার নিশ্চিত করে স্টার্ট দিলে ইঞ্জিন, ক্লাচ এবং গিয়ারবক্স—তিনটি অংশই অপ্রয়োজনীয় চাপ থেকে মুক্ত থাকে। এতে যন্ত্রাংশের আয়ু বাড়ে এবং বাইক দীর্ঘদিন ভাল থাকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গিয়ারে রেখে ইঞ্জিন চালানো যতটা সহজ মনে হয় ততটাই ক্ষতিকর, তাই প্রতিবার স্টার্টের আগে গিয়ার ফাঁকা করে নেওয়াই নিরাপদ এবং যুক্তিযুক্ত পদ্ধতি।
এজেড

