মোটরসাইকেল বা গাড়ি চালানোর সময় ‘ইঞ্জিন ব্রেক’ কথাটি অনেকেই শুনেছেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অথচ অনেক সময় অবহেলিত বিষয়। সঠিকভাবে ইঞ্জিন ব্রেক ব্যবহার করলে গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালানো আরও নিরাপদ ও মসৃণ হয়। চলুন জেনে নিই ইঞ্জিন ব্রেক কী, এটি কিভাবে কাজ করে এবং কখন এটি ব্যবহার করা উচিত।
ইঞ্জিন ব্রেক কী?
বিজ্ঞাপন
ইঞ্জিন ব্রেক হচ্ছে গতি কমানোর একটি প্রক্রিয়া, যেখানে গিয়ার ডাউন করার মাধ্যমে ইঞ্জিনের রোধ (resistance) ব্যবহার করে গতি কমানো হয়, বাইকের মূল ব্রেক (হাত বা পা দিয়ে নিয়ন্ত্রিত) ব্যবহার না করেই।
অর্থাৎ, যখন আপনি গ্যাস দেওয়া বন্ধ করে গিয়ার নিচে নামিয়ে আনেন, তখন ইঞ্জিন নিজেই চাকার গতি কমিয়ে ফেলে। এটাই হলো ইঞ্জিন ব্রেকিং।

ইঞ্জিন ব্রেক কিভাবে কাজ করে?
বিজ্ঞাপন
গ্যাস ছেড়ে দিলে (থ্রটল বন্ধ করলে) ইনটেক ভাল্বের মাধ্যমে ইঞ্জিনে বাতাস প্রবেশ কমে যায়।
নিচের গিয়ারে থাকা অবস্থায় ইঞ্জিনের ঘূর্ণন শক্তি (RPM) বেশি থাকে, কিন্তু গতি কম।
এই অবস্থায় ইঞ্জিনই চাকার গতি কমিয়ে ফেলে—একে বলে ইঞ্জিন ব্রেক।

কখন ইঞ্জিন ব্রেক ব্যবহার করবেন?
১. নেমে আসার সময় (ডাউনহিল)
উঁচু পাহাড় বা ঢালু রাস্তা দিয়ে নামার সময় সাধারণ ব্রেক বারবার ব্যবহার করলে তা গরম হয়ে পড়ে এবং ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে। এ সময় ইঞ্জিন ব্রেক নিরাপদ বিকল্প।
২. ভেজা বা পিচ্ছিল রাস্তায়
বৃষ্টির সময় হঠাৎ ব্রেক করলে স্কিড করার ঝুঁকি থাকে। ইঞ্জিন ব্রেকের মাধ্যমে ধীরে ধীরে গতি কমানো নিরাপদ।

৩. জ্যামে ধীর গতিতে চলার সময়
নরমালি থ্রটল বন্ধ করে গিয়ার ডাউন করলে ইঞ্জিন নিজেই গতি কমিয়ে দেয়, এতে বারবার ব্রেক চাপতে হয় না।
৪. ট্রাফিক সিগনাল বা ইউটার্নের আগে
সিগনাল কিংবা মোড় ঘোরার আগে গিয়ার ডাউন করে ইঞ্জিন ব্রেক নিলে বাইক থামানো সহজ হয় এবং নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে।
ইঞ্জিন ব্রেকের উপকারিতা
ব্রেক প্যাড বা ডিস্কের উপর চাপ কম পড়ে
কিড বা চাকা লক হওয়ার সম্ভাবনা কমে
মসৃণ গতি কমানোর সুবিধা
লম্বা সময় বাইক চালানোর সময় ব্রেক সিস্টেমকে ঠান্ডা রাখে
সতর্কতা
ইঞ্জিন ব্রেক দিতে গেলে হঠাৎ গিয়ার অনেকটা নিচে নামিয়ে ফেললে বাইক জার্ক করতে পারে
ইঞ্জিন ব্রেক নতুন চালকদের জন্য শুরুতে কঠিন হতে পারে
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেলে হার্ড ব্রেক করলে কী হয়?
স্পিড অনুযায়ী সঠিক গিয়ার নির্বাচন না করলে বিপদ হতে পারে
ইঞ্জিন ব্রেক হচ্ছে গাড়ি বা বাইক চালানোর একটি বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল, যা সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে নিরাপদ এবং আরামদায়ক ড্রাইভিং নিশ্চিত হয়। বিশেষ করে পাহাড়ি রাস্তা বা ভেজা রাস্তায় এটি অত্যন্ত কার্যকর। সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে আপনি সহজেই ইঞ্জিন ব্রেকিং রপ্ত করতে পারেন।
এজেড

