শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বর্ষাকালে ভেজা রাস্তায় বাইক নিরাপদে চালানোর ১০টি কৌশল

অটোমোবাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ জুলাই ২০২৫, ১২:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

RAIN

বর্ষা মানেই তাপদাহের পর শান্তিময় ঠান্ডা পরিবেশ, কিন্তু মোটরসাইকেল চালকদের জন্য বর্ষা অনেক সময়ই রীতিমতো ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায়। স্লিপি রাস্তা, কম ভিজিবিলিটি, কাদা-পানি—সব মিলিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুণে। তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন ও সঠিক প্রস্তুতি থাকলে বর্ষাতেও মোটরসাইকেল চালানো হতে পারে নিরাপদ এবং ঝামেলামুক্ত।

চলুন দেখে নেওয়া যাক বর্ষাকালে বাইক চালানোর কিছু সেরা টিপস।


বিজ্ঞাপন


১. স্লিপ রোডে সাবধানে চালান

বৃষ্টির পানিতে রাস্তা ভিজে গেলে বাইকের টায়ারের গ্রিপ কমে যায়। বিশেষ করে নতুন করে বৃষ্টি শুরু হলে রাস্তার ওপরে ধুলো-ময়লা, তেল বা কাদা খুব দ্রুত পিচ্ছিল হয়ে ওঠে।

করণীয়:

হঠাৎ ব্রেক না করে ধীরে ধীরে গতি কমান


বিজ্ঞাপন


বাঁক নিতে সময় নিন, হেলিয়ে বাইক চালাবেন না

রাস্তার মাঝে বা সাদা মার্কিং লাইনে চাকা না তুলেই চলুন

বাইক

২. বাইকের টায়ার পরীক্ষা করুন

ভালো গ্রিপ থাকা টায়ার বর্ষাকালে সবচেয়ে বড় বন্ধু। পুরনো ও মসৃণ টায়ার পানির ওপর ঠিকভাবে টিকতে পারে না, ফলে স্কিড বা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

করণীয়:

টায়ারের ট্রেড গভীরতা (চাকা কতটা খাঁজযুক্ত) দেখে নিন

প্রয়োজনে বর্ষার আগে নতুন টায়ার লাগান

টায়ারের সঠিক চাপ (air pressure) বজায় রাখুন

৩. ব্রেক চেক করুন

বৃষ্টির পানিতে ব্রেক অনেক সময় ঠিকমতো কাজ করে না, বিশেষ করে ড্রাম ব্রেক। তাই আগে থেকেই ব্রেক ভালোভাবে টিউন করে নেওয়া জরুরি।

রা্ড

করণীয়:

ডিস্ক ব্রেক হলে ব্রেক প্যাডের অবস্থা দেখুন

ড্রাম ব্রেক হলে সেটি ঠিকমতো কাজ করছে কি না, টেস্ট করুন

ব্রেক ব্যবহার করুন সামনে ও পেছনে ব্যালেন্স রেখে

৪. প্রয়োজনীয় বর্ষার সরঞ্জাম ব্যবহার করুন

ভিজে গিয়ে ঠান্ডা লাগা বা অসুস্থ হওয়া ছাড়াও ভেজা কাপড় চালাতে অসুবিধা তৈরি করে।

করণীয়:

ওয়াটারপ্রুফ রেইন কোট ও রেইন প্যান্ট ব্যবহার করুন

জুতা ঢাকার জন্য রেইন শু কভার ব্যবহার করুন

হেলমেটে ভিজর (visor) থাকলে ওটি মুছে পরিষ্কার রাখুন

৫. হেডলাইট ও টেইললাইট চালু রাখুন

বৃষ্টির মধ্যে ভিজিবিলিটি অনেক কমে যায়। তাই আপনার উপস্থিতি অন্যদের জানাতে হেডলাইট এবং টেইললাইট চালু রাখা জরুরি—এমনকি দিনের বেলায়ও।

বাইক২

৬. বাইকে অতিরিক্ত গিয়ার ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন

গিয়ার কম দিলে ইঞ্জিন ব্রেকিং ভালো কাজ করে, আর এতে হঠাৎ ব্রেক করার প্রয়োজন কম পড়ে। এতে স্লিপ করার ঝুঁকি কমে যায়।

৭. পানিতে বাইক ডুবিয়ে চালাবেন না

রাস্তার নিচে গর্ত বা ড্রেন থাকলে তা বোঝা কঠিন। তাই জলমগ্ন রাস্তায় বাইক চালালে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা হতে পারে।

করণীয়:

ভাঙাচোরা বা অচেনা রাস্তা প্লাবিত থাকলে বিকল্প পথ বেছে নিন

একদম টেইলপাইপ পর্যন্ত ডুবে গেলে পানি ইঞ্জিনে ঢুকে বাইক বন্ধ হয়ে যেতে পারে

৮. নিরাপদ গতিতে চালান

বর্ষাকালে রাস্তা যতই ফাঁকা হোক না কেন, বেশি গতি মানেই বিপদের সম্ভাবনা। দ্রুত থামতে না পারলে স্লিপ করে পড়ে যেতে পারেন।

সর্বোচ্চ ৪০–৫০ কিমি/ঘণ্টার মধ্যে গতি বজায় রাখুন বর্ষায়।

বাইক৩৫

৯. বাইকের নিয়মিত পরিষ্কার ও তেলানো (lubrication)

বৃষ্টির পানিতে বাইকের চেইন, ব্রেক ও বিভিন্ন অংশে মরিচা ধরতে পারে। তাই নিয়মিত পরিষ্কার ও চেইনে গ্রিজ ব্যবহার করুন।

১০. বিমা এবং ইন্স্যুরেন্স আপডেট রাখুন

বর্ষাকাল দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই আপনার বাইকের ইন্স্যুরেন্স ও রেজিস্ট্রেশন কাগজ ঠিকঠাক রাখুন।

আরও পড়ুন: মোটরসাইকেলের জন্য কোন ইঞ্জিন অয়েল ভালো?

বর্ষাকালে বাইক চালানো চ্যালেঞ্জিং হলেও সঠিক প্রস্তুতি ও মনোযোগ থাকলে তা নিরাপদ ও উপভোগ্য হতে পারে। বৃষ্টিকে ভয় না পেয়ে তাকে বুঝে চালালে, বর্ষার পথও হতে পারে ভ্রমণের নতুন এক আনন্দ।

এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর