বর্তমান সময়ের নারীরা কেবল ঘরের ভেতর সীমাবদ্ধ নন, রাস্তায়ও তারা সমান সাবলীল। অফিস, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা নিজের ব্যবসার প্রয়োজনে নারীরা এখন প্রতিদিন বাইক চালিয়ে চলাফেরা করছেন। কিন্তু এই চলার বাহন হিসেবে তাদের জন্য মোটরসাইকেল ভালো, না স্কুটার, সেটি নিয়ে অনেকের মনেই দ্বিধা রয়েছে।
প্রথমেই যেটা বুঝে নেওয়া জরুরি, তা হলো—ব্যক্তি বিশেষের প্রয়োজন, অভিজ্ঞতা, দৈনন্দিন রুটিন ও আর্থিক সামর্থ্যের উপর ভিত্তি করেই বাহন বাছাই করা উচিত।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: কেন তরুণরা মোটরসাইকেলে বেশি আকৃষ্ট হয়?
স্কুটার সাধারণত গিয়ারবিহীন হওয়ায় এটি চালানো তুলনামূলকভাবে সহজ। যারা নতুন রাইডার, তাদের জন্য স্কুটার চালানো বেশি সুবিধাজনক। এছাড়া এটি অপেক্ষাকৃত হালকা, ট্র্যাফিকে দ্রুত চলাচলে সুবিধা দেয় এবং পা রাখার ফ্ল্যাট জায়গা থাকায় সালোয়ার-কামিজ কিংবা শাড়ি পরেও স্বাচ্ছন্দ্যে চালানো যায়। আন্ডারসিট স্টোরেজ থাকার কারণে বই, ব্যাগ বা হেলমেট রাখার সুবিধাও মেলে। শহরের ভেতরে ছোট দূরত্বে যাতায়াতের ক্ষেত্রে স্কুটার এক কথায় আদর্শ। তবে এর সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। হাইওয়েতে স্কুটারের ভারসাম্য ও গতি কম, লম্বা সময় চালালে আরাম কমে যায় এবং দুইজন যাত্রী বহনে কার্যকারিতা কমে যায়।

অন্যদিকে, মোটরসাইকেলের গতি ও পাওয়ার বেশি। হাইওয়েতে বা দূরপাল্লার যাত্রায় এটি খুবই কার্যকর। ভারসাম্য, নিয়ন্ত্রণ এবং ফুয়েল এফিশিয়েন্সির দিক থেকেও এটি অনেক সময় এগিয়ে থাকে। যারা অভিজ্ঞ রাইডার, তাদের জন্য মোটরসাইকেল বেশি স্বাধীনতা দেয়। তবে গিয়ার ও ক্লাচ ব্যবস্থাপনা জেনে নিতে হয়, এবং যারা নতুন চালক, তাদের জন্য এটি চালানো কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। শাড়ি বা স্কার্ট পরিহিত অবস্থায় মোটরসাইকেল চালানো অনেক সময় অনিরাপদও হয়ে দাঁড়ায়।
বিজ্ঞাপন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা নতুন, তাদের স্কুটার দিয়ে শুরু করাই নিরাপদ। এরপর আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতা বাড়লে মোটরসাইকেল চালনাও সহজ হয়ে যায়। তবে যে বাহনই ব্যবহার করা হোক না কেন, হেলমেট, ট্রাফিক আইন মেনে চলা এবং রাইডিংয়ের প্রশিক্ষণ নেওয়া সবার জন্য বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।

সবশেষে বলা যায়, নারীদের জন্য কোন বাহন ভালো, সেটি নির্ভর করে ব্যক্তির প্রয়োজন, অভিজ্ঞতা ও জীবনধারার উপর। কেউ যদি শুধু শহরের ভেতর চলাফেরা করেন, তবে স্কুটার যথেষ্ট। আর যদি দূরপাল্লায় যাতায়াত, রাইড শেয়ারিং বা ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করার ইচ্ছে থাকে, তাহলে মোটরসাইকেলই বেশি উপযোগী হবে। বাহন যেটাই হোক, নিরাপত্তা ও আত্মবিশ্বাসই সবার আগে।
এজেড

