শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ট্রেন্ডিং

কেন তরুণরা মোটরসাইকেলে বেশি আকৃষ্ট হয়?

অটোমোবাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২৫, ১১:৩৮ এএম

শেয়ার করুন:

motorcycle

সন্ধ্যায় রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন, এমন সময় পাশ দিয়ে হুংকার দিয়ে ছুটে গেল এক তরুণ বাইকার। কালো হেলমেট, কাঁধে ব্যাগ, চোখে আত্মবিশ্বাস। এমন দৃশ্য আমাদের চারপাশে এখন নিত্যদিনের। কিন্তু প্রশ্ন একটাই—তরুণদের এত আকর্ষণ বাইকের প্রতি কেন? এটা শুধু বাহন না, অনেকের কাছে এটি প্রেম, স্বাধীনতা, স্টাইল, এমনকি নিজেকে প্রকাশের এক মাধ্যম।

এই প্রতিবেদনে জানানো হবে মোটরসাইকেলের প্রতি তরুণদের ভালোবাসার মানে কী এবং এর পেছনে কোন কোন মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক কারণ কাজ করে।


বিজ্ঞাপন


১. স্বাধীনতার অনুভব— ‘আমি আমার মতো চলি’

মোটরসাইকেল মানেই ‘আমি কারো অপেক্ষা করি না’—এই মনোভাব। বাসের জন্য লাইনে দাঁড়ানো, সিএনজির দর কষাকষি বা রিকশার ধীরগতির হাত থেকে মুক্তি পেতে চাইলে তরুণদের একমাত্র ভরসা বাইক।

বিশেষ করে যারা বিশ্ববিদ্যালয়, চাকরি বা ফ্রিল্যান্স পেশায় রয়েছেন, তাদের কাছে বাইক মানেই সময় বাঁচানো আর স্বাধীন চলাফেরা।

pexels-apollostudio-15146404


বিজ্ঞাপন


২. অ্যাডভেঞ্চার ও রোমাঞ্চ— ‘সাউন্ডটাই হৃদস্পন্দন’

বাইকের শব্দ, রাস্তার হাওয়া, গতির উত্তেজনা—এই অ্যাডভেঞ্চার অনেক তরুণের কাছে একধরনের থ্রিল।

দূরে কোথাও যাওয়ার হঠাৎ পরিকল্পনা, বন্ধুদের সঙ্গে বাইক রাইড, পাহাড়ি সড়ক ধরে চলা— এসব মুহূর্ত বাইকারদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকে। তারা মনে করেন, বাইক চালানো মানেই জীবনের প্রতিটা সেকেন্ড উপভোগ করা।

৩. স্টাইল ও ফ্যাশন স্টেটমেন্ট— ‘বাইক থাকলে লুকই আলাদা’

একটি ভালো বাইক মানেই শুধু গতি নয়, স্টাইলও। তরুণদের অনেকেই বাইককে নিজের ফ্যাশনের অংশ মনে করেন।

ফুল ফেস হেলমেট, লেদার জ্যাকেট, স্নিকার্স— সব মিলিয়ে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী ও আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করে বাইক। সোশ্যাল মিডিয়ায় 'বাইক উইথ ব্যাকগ্রাউন্ড' ছবি তো ভাইরালের রেসিপি!

ride_pic

৪. ইমোশনাল কানেকশন— ‘বাইকটা আমার নিজের একটা অংশ’

অনেক তরুণ বাইককে শুধু বাহন নয়, বরং নিজের জীবনের সাথী মনে করেন। কেউ নিজের টাকায় প্রথম বাইক কিনে গর্ব করেন, কেউ ভাইয়ের পুরনো বাইক চালিয়েও আবেগে ভাসেন।

বাইকের সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্ক, ভালোবাসার গল্প কিংবা স্মৃতিময় ভ্রমণ—এসব একেকটা গল্পের নাম ‘বাইক ডায়েরি’ হতে পারে।

৫. রাইড শেয়ারিং ও উপার্জনের মাধ্যম— ‘স্টাইল + ইনকাম’

পাঠাও, উবার এবং ওভাইয়ের মতো রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম তরুণদের বাইকের প্রতি আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

নিজের বাইক চালিয়ে মাসে কিছু অতিরিক্ত আয় করার সুযোগ অনেক তরুণকেই বাইকের দিকে টেনে এনেছে। স্বাধীনভাবে কাজ করার অনুভূতির সঙ্গে ইনকাম— দুটোই একসঙ্গে।

youngh

৬. সামাজিক প্রভাব ও বন্ধুবান্ধব— ‘সবার বাইক আছে, আমার নাই কেন?’

বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ ক্যাম্পাসে ‘বাইকার’ বন্ধুদের দেখে অন্য তরুণরাও আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বন্ধুদের সঙ্গে ট্যুর, আড্ডা কিংবা শুধুই শো-অফ—সবকিছুতেই বাইকের একটা সামাজিক মর্যাদা তৈরি হয়েছে।

৭. মনের ওপর প্রভাব— ‘ডিপ্রেশন কমাতে বাইক রাইড?’

বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাইক চালানো অনেক সময় মানসিক চাপ কমায়। বাতাসে চলতে চলতে মানুষের মাথার চিন্তা দূর হয়, মন ফুরফুরে হয়। একাকীত্ব, স্ট্রেস, ব্রেকআপের পরেও অনেক তরুণ বাইকে ঘুরে নিজেকে সামলে নেন।

আরও পড়ুন: মোটরসাইকেল চালিয়ে ঈদে বাড়ি গিয়েছিলেন? ঢাকায় ফিরে এখন যা করতেই হবে

৮. বাইক শুধু বাহন নয়, তরুণদের নিজস্বতা

তরুণদের কাছে মোটরসাইকেল মানে শুধু গন্তব্য নয়, বরং ভ্রমণের অনুভব, নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকার অনুভূতি।

আবার কারও কাছে এটি পরিবারের দায়িত্ব পালনের মাধ্যম, কারও কাছে স্বপ্ন ছোঁয়ার প্রথম ধাপ। এই বাইকের প্রেমেই তরুণেরা জীবনের পথে এগিয়ে চলে—ঝুঁকি নিয়েও, ভালোবাসা নিয়ে।

এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর