অনেকের বিশ্বাস সকালে পেট্রোল ভরলে বেশি পরিমাণ জ্বালানি পাওয়া যায়। এমন ধারণা রয়েছে বহু যানবাহন চালকের মধ্যে। কিন্তু এই বিশ্বাসের পেছনে কতটা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে? জেনে নিন সত্যিটা।
সকালে পেট্রোল ভরলে বেশি পাওয়া যায়?
অনেকেই বলেন, দিনের শুরুতে বিশেষ করে খুব ভোরে পেট্রোল ভরালে বেশি লাভ হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, তখন তাপমাত্রা কম থাকে এবং জ্বালানির ঘনত্ব বেশি থাকে। ফলে, একই দামে আপনি নাকি তুলনামূলকভাবে বেশি পরিমাণ পেট্রোল বা ডিজেল পান।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন গরম থাকা অবস্থায় পানি দিয়ে ধোয়া কি ঠিক?
এই ধারণা বহুদিন ধরেই চালু থাকলেও, বাস্তবে এর কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি ভুল ধারণা, যা কেবল মুখে মুখে ছড়িয়েছে।
ঘনত্ব ও তাপমাত্রা: সত্যিটা কী?
পেট্রোল বা ডিজেলের ঘনত্ব তাপমাত্রার ওপর কিছুটা নির্ভর করে ঠিকই, তবে সেই পরিবর্তন অত্যন্ত সামান্য।
উদাহরণস্বরূপ, ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে জ্বালানির ঘনত্বে পরিবর্তন হয় মাত্র ১ শতাংশেরও কম।
তাছাড়া, পেট্রোল পাম্পগুলোতে যে জ্বালানি রাখা হয়, তা মূলত ভূগর্ভস্থ ট্যাঙ্কে সংরক্ষিত থাকে। ফলে বাইরের তাপমাত্রার বড়সড় পরিবর্তনও জ্বালানির ঘনত্বে তেমন প্রভাব ফেলে না।

আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার
বর্তমানে অধিকাংশ পেট্রোল পাম্পে তাপমাত্রা সংশোধিত ডিজিটাল মিটার ব্যবহৃত হয়। এতে তাপমাত্রা যাই হোক না কেন, গ্রাহক নির্ধারিত পরিমাণ জ্বালানিই পান।
বাংলাদেশ সরকার নির্ধারিত মান অনুসারে, প্রতি ঘনমিটারে পেট্রোলের ঘনত্ব ৭৩০–৮০০ কেজি হওয়া উচিত। আপনি চাইলে পাম্পে থাকা ঘনত্ব পরীক্ষার মেশিনে এটি যাচাই করতে পারেন।
ভেজাল বা প্রতারণা কীভাবে বুঝবেন?
অনেক সময় পেট্রোল পাম্পে ভেজালের অভিযোগ শোনা যায় বা দেখা যায় মাপে কম দেওয়ার প্রবণতা। এটি তাপমাত্রা বা সকালে যাওয়ার সঙ্গে নয়, বরং পাম্প অপারেটরের অনিয়মের ফল। এমন ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানোই শ্রেয়।
সকালে পেট্রোল ভরলে বেশি জ্বালানি পাওয়া যায়—এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ভূগর্ভস্থ সংরক্ষণব্যবস্থার কারণে দিনে যেকোনো সময়েই আপনি সমপরিমাণ পেট্রোল বা ডিজেল পাবেন। তাই নির্দিষ্ট সময় নয়, গুরুত্ব দিন বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য পাম্প বেছে নেওয়ার ওপর।
এজেড

