মোটরসাইকেল এখন শুধু বাহন নয়, জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে অনেকের জন্য। তবে এই গতির জীবনে নিরাপত্তার গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে আধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে মোটরসাইকেলে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অ্যান্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম বা এবিএস। অনেকেই এবিএস নিয়ে শুনলেও এর কাজ, উপকারিতা কিংবা কেন প্রয়োজন—এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নেই। আজকের প্রতিবেদন সেই বিষয়েই।
এবিএস কী?
এবিএস (Anti-lock Braking System) হলো এমন একটি ব্রেকিং প্রযুক্তি, যা বাইকের ব্রেকিংয়ের সময় টায়ার লক হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমায়। বিশেষ করে হঠাৎ ব্রেক কষলে বাইক নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে, এবিএস সে সময় টায়ার লক না করে বাইকের ভারসাম্য বজায় রাখে।
কীভাবে কাজ করে এবিএস?
এবিএস প্রযুক্তিতে সেন্সর এবং কন্ট্রোলার থাকে, যা টায়ারের ঘূর্ণনের গতি নিরীক্ষণ করে। যদি কোনো টায়ার হঠাৎ করে লক হয়ে যেতে চায়, তখন এবিএস সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্রেক প্রেসার কমিয়ে দেয় এবং পুনরায় টায়ার ঘুরতে দেয়। ফলে বাইক স্লিপ বা স্কিড হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

বিজ্ঞাপন
এবিএস-এর উপকারিতা
নিরাপদ ব্রেকিং: বৃষ্টির দিন, কর্দমাক্ত রাস্তা বা বালুময় এলাকায় এবিএস বিশেষ কার্যকর। হঠাৎ ব্রেক করলেও বাইক সহজে স্লিপ করে না।
টায়ারের আয়ু বাড়ায়: টায়ারের অতিরিক্ত চাপ বা আকস্মিক ক্ষতি কমায়।
চালকের নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে: ব্রেক করার সময় চালক বাইকের উপর নিয়ন্ত্রণ হারান না, ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে।
সিটি রাইডিংয়ে বাড়তি নিরাপত্তা: ব্যস্ত শহরে হঠাৎ হর্ন, হঠাৎ রাস্তা পারাপার— এসব ক্ষেত্রে এবিএস দারুণ সাপোর্ট দেয়।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেলের ইকোনমি গতি কত?
বাংলাদেশে এবিএস-এর প্রচলন
বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির ১৫০ সিসি থেকে ৩০০ সিসি বাইকে এবিএস যুক্ত করা হচ্ছে। সরকারি নীতিমালায় নিরাপত্তার দিক থেকে এবিএস যুক্ত বাইকের গুরুত্ব ক্রমেই বাড়ছে। উন্নত বিশ্বে ইতোমধ্যে ১২৫ সিসি বা তার বেশি সিসির বাইকে এবিএস বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এবিএস প্রযুক্তি আমাদের দেশের মোটরসাইকেল রাইডারদের জন্যও হতে পারে নিরাপত্তার এক নতুন অধ্যায়। একটু বেশি খরচ হলেও নিজেকে এবং অন্যদের নিরাপদ রাখতে এবিএস প্রযুক্তি যুক্ত মোটরসাইকেল নির্বাচন করা সময়ের দাবি।
এজেড

