হোন্ডা কার্স ইন্ডিয়া লিমিটেড (এইচসিআইএল) মার্চ ২০২৫-এ ঘরোয়া বাজারে ৭২২৮ ইউনিট গাড়ি বিক্রি করেছে এবং বিদেশে ৪৬৫৬ ইউনিট রফতানি করেছে।
এই সংখ্যাগুলো একত্রিত একত্রিত করে জাপানি এই ব্র্যান্ডটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ১,২৬,১৫১ ইউনিট বিক্রি করেছে। এটি গত অর্থবছরের (২০২৩-২৪) ১,২৪,১৭৩ ইউনিটের তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিস্তারিতভাবে দেখলে, এই বছর ঘরোয়া বিক্রি ৬৫,৯২৫ ইউনিটে পৌঁছেছে, যেখানে রফতানি ৬০,২২৬ ইউনিটে উন্নীত হয়েছে, যা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। এটি ব্র্যান্ডটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রপ্তানির পরিমাণ।
আরও পড়ুন: তেলের বদলে ব্যাটারিতে চলবে টাটার এই গাড়ি
ব্র্যান্ডের ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে ঘরোয়া বিক্রি ছিল ৭,০৭১ ইউনিট এবং রপ্তানি ছিল ৬,৮৬০ ইউনিট। এর ফলে মার্চ ২০২৫-এ সামগ্রিক বিক্রি ১৪.৭ শতাংশ কমেছে। এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে, যদিও বছরের সামগ্রিক বিক্রিতে সামান্য উন্নতি হয়েছে, মার্চ মাসে বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
হোন্ডা কার্স ইন্ডিয়া লিমিটেডের বিপণন ও বিক্রয় বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট কুনাল বেহল অর্থবছরের সামগ্রিক বিক্রয় কর্মক্ষমতা নিয়ে বলেন, এইচসিআইএল-এর বিক্রয় কর্মক্ষমতা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চলমান কঠিন ব্যবসায়িক পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। ঘরোয়া বাজারে শিল্পটি নতুন চাহিদা সৃষ্টির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, যা এইচসিআইএল-এর ঘরোয়া বিক্রয়েও প্রতিফলিত হয়েছে। তবে আমরা জাপানে এলিভেটের শক্তিশালী রপ্তানি ব্যবসার নেতৃত্বে সর্বোচ্চ রফতানি পরিমাণ রেকর্ড করেছি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি লঞ্চ হওয়া অল-নিউ আমাজে বাজারে ভালো সাড়া পেয়েছে, যা আমাদের ফ্যামিলি সেডান সেগমেন্টে অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। নতুন অর্থবছরে চাহিদা সৃষ্টি এখনও চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকতে পারে, তবে আমরা আশাবাদী এবং বিশ্বাস করি যে গ্রাহক সন্তুষ্টির প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি আমাদের বাজারে কার্যকরভাবে নেভিগেট করতে এবং ইতিবাচক ফলাফল অর্জন করতে সক্ষম করবে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে হোন্ডার ঘরোয়া বিক্রি ৬৫,৯২৫ ইউনিটে পৌঁছেছে, যা গত বছরের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় সামান্য কম হলেও, মার্চ ২০২৫-এ ঘরোয়া বিক্রি ৭,২২৮ ইউনিটে পৌঁছে গত বছরের মার্চের ৭,০৭১ ইউনিটের তুলনায় কিছুটা উন্নতি দেখিয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, বছরের শেষ মাসে ব্র্যান্ডটি ঘরোয়া বাজারে কিছুটা গতি ফিরে পেয়েছে। এই উন্নতির পিছনে সম্প্রতি লঞ্চ হওয়া অল-নিউ আমাজের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এই মডেলটি ভারতীয় গ্রাহকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এবং সেডান সেগমেন্টে হোন্ডার অবস্থানকে আরও মজবুত করেছে।
হোন্ডার জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরটি রফতানির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে উঠেছে। ৬০,২২৬ ইউনিট রপ্তানির মাধ্যমে ব্র্যান্ডটি ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা এর ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এই সাফল্যের পিছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে হোন্ডা এলিভেট, যা জাপানে ব্যাপক চাহিদা পেয়েছে। ভারত থেকে উৎপাদিত এই মিড-সাইজ এসইউভি বিশ্ববাজারে হোন্ডার অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে এবং ভারতকে হোন্ডার গ্লোবাল ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করেছে। তবে, মার্চ ২০২৫-এ রপ্তানি ৪,৬৫৬ ইউনিটে নেমে এসেছে, যা গত বছরের মার্চের ৬,৮৬০ ইউনিটের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হ্রাস। এটি সামগ্রিক মার্চ বিক্রির পতনের একটি বড় কারণ।
ভারতীয় অটোমোবাইল শিল্প গত কয়েক বছরে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নতুন চাহিদা সৃষ্টি করা শিল্পের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ক্রয়ক্ষমতার অভাব এবং বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে গ্রাহকদের গাড়ি কেনার প্রবণতা কমেছে। হোন্ডাও এই প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। যদিও এলিভেট এবং আমাজের মতো মডেলগুলো বাজারে ভালো সাড়া পেয়েছে, তবুও সামগ্রিক ঘরোয়া বিক্রি বাড়াতে ব্র্যান্ডটি লড়াই করছে। কুনাল বেহলের মতে, এই চ্যালেঞ্জ নতুন অর্থবছরেও অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, গ্রাহকদের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি এবং নতুন মডেলের সাফল্য তাদের এই কঠিন সময়ে টিকে থাকতে সাহায্য করবে।
এজেড