মোটরসাইকেল একটি মেশিন বা যন্ত্র। আরও স্পষ্ট করে বললে, অনেক যন্ত্রের সমষ্টি। ইঞ্জিন, গিয়ার বক্স, পিস্টন কত কিছু আছে। সঙ্গে আছে ছোট ছোট যন্ত্রাংশ। এই সব কিছু একসঙ্গে চলতে শুরু করলে বাইকও চলে। কিন্তু বাইক থামলে?
বাইক থামার পর মানে ইঞ্জিন বন্ধ করে দেওয়ার পর এক ধরণের শব্দ হয়। টিক, টিক, টিক – অনেকটা এরকম। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, এটা কিসের শব্দ? কেন এরকম শব্দ হয়? এতে বাইকের কোনও ক্ষতি হয় না তো?
বিজ্ঞাপন
এর উত্তর হল, না। এমন শব্দের কারণে বাইকের কোনও ক্ষতি হয় না। আসলে ইঞ্জিন গরম হওয়ার কারণেই এমন শব্দ হয়। ইঞ্জিন যখন ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়, তখন এই শব্দও বন্ধ হয়ে যায়।

বাইকের ধোঁয়ায় অনেক রকমের ক্ষতিকর পদার্থ থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হল কার্বন মনোঅক্সাইড। পাশাপাশি হাইড্রোকার্বন ও নাইট্রোজেন অক্সাইডও থাকে। এই জন্য বাইকের সাইলেন্সারে ক্যাটালিটিক কনভার্টার লাগানো হয়। এই কনভার্টার ক্ষতিকারক পদার্থগুলির সঙ্গে রাসয়নিক বিক্রিয়া করে কার্বন মনোক্সাইডকে কার্বন ডাই অক্সাইডে রূপান্তরিত করে।
আরও পড়ুন: ইয়ামাহা আর১৫ মোটরসাইকেলের নয়া রেকর্ড
বিজ্ঞাপন
বাইক চললে সাইলেন্সার গরম হয়ে যায়। ফলে কনভার্টারের ভেতরের পাইপও গরম হতে থাকে। তাপে এই পাইপ প্রসারিত হয়। দীর্ঘক্ষণ চালানোর পর বাইক যখন বন্ধ করা হয়, তখন সাইলেন্সার ঠান্ডা হতে শুরু করে। সঙ্গে পাইপও। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পাইপ ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে ফের আগের অবস্থায় ফিরে যায়।

পাইপের বিভিন্ন স্তর ভিন্ন হারে ঠান্ডা হয়। বোল্টের ক্যাম্পিং লোডের পরোয়া না করেই একে অপরের সঙ্গে ঘষা খায়। ইঞ্জিন চালু থাকলে ক্যাটালিটিক কনভার্টারের তাপমাত্রাও বেশি থাকে। তখন এর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত নির্গমন গ্যাসের কারণে এটি প্রসারিত হয়। কিন্তু ইঞ্জিন বন্ধ করার পর এটি ধীরে ধীরে ঠান্ডা হতে থাকে, আর প্রক্রিয়া যখন চলে তখন টিক টিক শব্দ হয়।
টিক টিক শব্দ সাধারণত নতুন মডেলের বাইকে শোনা যায়। পুরনো মডেলের বাইকে এই শব্দ হয় না। কারণ তাতে ক্যাটালিটিক কনভার্টার থাকে না। বিএস ৪ ও বিএস ৬ বাইকেই এই শব্দ হয়, কারণ এই মডেলগুলোতে ক্যাটালিটিক কনভার্টার থাকে, যা গরম হলে প্রসারিত হয় এবং তখনই টিক টিক শব্দ করে। এটাই এমন শব্দের আসল কারণ।
এজেড

