images

তথ্য-প্রযুক্তি

নতুন মহাদেশের খোঁজে...

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

২৬ মে ২০২৩, ১০:০৬ এএম

২০০৫ সালের কথা। পূর্ব আফ্রিকার দিকে, ইথিওপিয়া মরুভূমির মাঝখান দিয়ে ৩৫ মাইল লম্বা এক ফাটল জন্মাতে দেখে পুরো পৃথিবী। মূলত, টেকটোনিক প্লেটের স্থানান্তরের কারণেই হয়েছিল এমনটা। তবে আজ যে কথাগুলো বলতে যাচ্ছি, সেটার শুরু হয়েছিল সেদিনই। ইথিওপিয়ায়। 

এরপর বহু বছর পেরিয়েছে। যত দিন গিয়েছে, ফাটলের পরিমাণ আরো বৃদ্ধিই পেয়েছে কেবল। এতোদিন পর এসে পুরো ব্যাপারটা ঠিকঠাকভাবে পর্যবেক্ষণ করে অবশেষে নিজেদের মতামত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 

তাদের কথানুসারে, এই ফাটল থেকেই ধীরে ধীরে প্রশস্ত হচ্ছে প্রশান্ত, আটলান্টিক, ভারত, আর্কটিক আর অ্যান্টার্কটিকের পরের মহাসাগর। আর এই মহাসাগরের মধ্য দিয়েই ভাঙতে চলেছে আফ্রিকা মহাদেশ। দুটো ভাগ হতে চলেছে মহাদেশটি।

এই বিভাগের মধ্য দিয়ে ভাগ হচ্ছে আফ্রিকান মহাদেশের সোমালিয়ান টেকটোনিক প্লেট আর ন্যুবিয়ান টেকটোনিক প্লেট। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ হওয়ায় এই বিভাজন চোখে পড়ছেও অনেক বেশি আলাদাভাবে। ২০০৪ সালের প্রকাশিত 'আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি আয়েন্স লেটারস' নামক একটি গবেষণাকে অনুসরণ করেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন তারা। 

সাধারণত প্রতি বছর কয়েক মিলিমিটার সরে যায় পৃথিবীর প্লেটগুলো। আর সেই অনুযায়ী হিসেব অনুসারে আফ্রিকার দুইভাগ হয়ে যাওয়াটাও খুব স্বাভাবিক ঘটনা।

countryপ্রশ্ন হলো, আসলেই যদি নতুন মহাসাগর এসে আফ্রিকাকে ভাগ করে দেয়, তাহলে কেমন হবে সেই নতুন রকমের আফ্রিকা? সাধারণত পানির কাছাকাছি অবস্থানে থাকা নগরীগুলো সবসময়ই নতুন করে সমৃদ্ধ হয়েছে। চাষাবাদ, বাণিজ্য-সবখানেই এসেছে পরিবর্তন। আফ্রিকা মহাদেশ ভেঙে গেলে সেই অনুযায়ীই পরিবর্তন দেখবে ইথিওপিয়া আর উগান্ডার মতো দেশগুলোও। লোহিত সাগর আর গালফ অব এডেনের বাঁধ ভেঙে এক্ষেত্রে আফার অঞ্চল এবং ইস্ট আফ্রিকান রিফট ভ্যালি দিয়ে নতুন সমুদ্র চলে যাবে এক্ষেত্রে।

নতুন মহাদেশ, নতুন মহাসাগর, নতুন সম্ভাবনা- শুনতে বেশ লাগছে, তাই না? হ্যাঁ, অঞ্চলগুলোর মানুষের জীবনে কিছুটা পরিবর্তন আসলেও এই বিভক্তির ঘটনাটি ইতিবাচক হয়েই আসবে সবার জীবনে এমনটাই মনে করছেন সবাই।

কবে হবে এই বিভাজন? খুব দ্রুত কিন্তু নয়। বিশেষজ্ঞদের হিসেব মতে, আফ্রিকার নতুন মহাসাগরটি দেখতে এখনো ৫ থেকে ১০ মিলিয়ন বছর লেগে যাবে পৃথিবীর। হ্যাঁ, আমরা হয়তো দেখতে পাবো না নতুন মহাদেশ বা মহাসাগরকে। তবে হিসাব ঠিক থাকলে পৃথিবী নতুন একটা মহাদেশ পেতে যাচ্ছে কোনো একটা সময়- এই চিন্তাটাও কি কম আনন্দের! 

এজেড