তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
১২ মে ২০২৩, ০৯:২০ পিএম
বঙ্গোপসাগারে তৈরি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। শক্তি সঞ্চয় করে ঝড়টি এখন উপকূলের দিকে আগাচ্ছে। যেভাবে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান অনুকূল পরিবেশ পেয়ে ধাপে ধাপে সুপার সাইক্নোন হয়ে উঠেছিল, তেমনই প্রবণতা ঘূর্ণিঝড় মোখারও। জানুন ঘূর্ণিঝড় কেন সাগরেই সৃষ্টি হয়।
নাতিশীতোঞ্চ অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড় ও ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে গঠনগত কিছু পার্থক্য রয়েছে। ক্রান্তীয় অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড় অর্থাৎ নিরক্ষরেখরা ৫ ডিগ্রি থেকে ২০ ডিগ্রি উত্তর ও দক্ষিণে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ বেশি হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের চারপাশে কিউমুলোনিম্বাস মেঘের আস্তরণ তৈরি হয়। তাকে বলা হয় মেঘের দেওয়াল। এই অঞ্চলে সাধারণ ঝড়ের গতিবেগ সর্বাধিক থাকে। ১০-২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে এই ঝড়। এই অংশটি যেখানে প্রভাব বিস্কার করে, সেখানে ক্ষয়ক্ষতি সর্বাধিক হয়।
মেঘের দেওয়ালকে ঘিরে থাকে দুইটি স্পাইরাল ব্যান্ড। উপগ্রহ থেকে দেখতে তাকে ছোটোখাটো গ্যালাক্সির মতো লাগে। এটি বেশ কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ হয়। এই অঞ্চলের প্রভাব স্থলভাবে যেখানে পড়ে, সেখানে বৃষ্টিপাত ঘটায়, সেই কারণেই এটির আর এক নাম রেইন ব্যান্ড।
বঙ্গোপসারে কেন বারবার ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়?
ঘূর্ণিঝড় যখন স্থলভাগে প্রবেশ করে, তথন সবার প্রথম বহিঃসীমা অঞ্চলে প্রভাব পড়ে। বঙ্গোপসাগর খুবই উষ্ণ। ফলে ঘূর্ণিঝড়কে আরও ভয়ঙ্কর করে তোলে। বিশ্বের অন্যান্য উপকূলের থেকে বঙ্গোপসাগরে জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি সবথেকে বেশি হয়। বিশ্বের বেশিরভাগ বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়গুলো ঘটেছে এই সাগরের উপকূলেই।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রকারভেদ
সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় অনুকূল পরিবেশ পেয়ে শক্তি বাড়াতে থাকায় গতিবেগ অনুসারে এই ঝড়ের পাঁচটি পৃথক স্তর। গতিবেগ অনুসারে যে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার ঊর্ধ্বে হয় তাকে ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ধরা হয়।
ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার থেকে ১১৭ কিলোমিটার যদি ঝড়ের গতিবেগ থাকে, তবে তাকে বলা হয় সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম বা প্রবল ঘূর্ণিঝড়। আর ঝড়ের গতিবেক যদি বেড়ে ঘণ্টায় ১১৮ কিলোমিটার থেকে ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হয় তবে তাকে বলে ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম বা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়। আর ঘূর্ণিঝড়ের গতি যদি ঘণ্টায় ১৬৬ কিলোমিটার থেকে ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়, তবে তাকে বলে এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম বা অত্যধিক প্রবল ঘূর্ণিঝড়। এরপরও যদি গতি বাড়ায় অর্থাৎ ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটারের ঊর্ধ্বে ঝড় বইতে থাকে, তবে তা রূপ নেয় সুপার সাইক্লোনে।
এজেড