images

তথ্য-প্রযুক্তি

তথ্য সুরক্ষায় বিদেশি সফটওয়্যার নির্ভরতা কমানোর আহ্বান

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০৪:৫৭ পিএম

ভোক্তাদের তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। আর এ সম্পর্কিত আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে নাগরিক অধিকার ও সীমবদ্ধার বিষয়টি খেয়াল রাখা দরকার রাষ্ট্রের। বাংলাদেশে তা হচ্ছে না। একইসঙ্গে সাইবার বিশ্বে বাংলাদেশের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় আর্থিকসহ বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সফটওয়্যার ব্যবহারে বিদেশি নির্ভরতা কমানো দরকার।   

আন্তর্জাতিক তথ্য সুরক্ষা সপ্তাহ (২২ থেকে ২৮ জানুয়ারি) উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এসব কথা বলেন আলোচকরা। 

এতে সভাপতিত্ব করেন সিসিএ ফাউন্ডেশন সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ। আলোচক ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা ফিনটেক, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড সাইবার সিকিউরিটি প্র্যাকটিশনার প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান ও সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাড. সাইমুম রেজা তালুকদার। কর্মশালায় তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।  

প্রকৌশলী মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারকারী সব মানুষই নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছে। এজন্য সচেতন থাকার বিকল্প নেই। সফটওয়্যার তৈরি থেকে শুরু করে এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো পোস্ট দিতেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে, আমার হাত দিয়ে সমাজের জন্য ক্ষতিকর কিছু হচ্ছে কি না।    

সাইমুম রেজা তালুকদার বলেন, আইন প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অধিকার এবং দায়িত্বশীলতা দুটো দিকই খেয়াল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তার অধিকার নিশ্চিতে আইনগুলোতে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পস্ট সীমারেখা থাকা উচিত যে রাস্ট্র কতোটুকু তথ্য নিতে পারবে। রাষ্ট্র কর্তৃক নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য নেয়ার এই প্রক্রিয়ার জবাবদিহিতা আদালতের মাধ্যমে নিশ্চিত করা উচিত। 
 
কাজী মুস্তাফিজ বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির যেভাবে প্রসার হচ্ছে সেখানে তথ্য সুরক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক সাইবার রাজনীতিতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব নির্ভর করছে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার উৎপাদনে দেশের ভূমিকা কতোটা তার ওপর। সাইবার বিশ্বে বাংলাদেশের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় আর্থিকসহ বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সফটওয়্যার ব্যবহারে বিদেশি নির্ভরতা কমানো দরকার। একইসঙ্গে ভোক্তাদের তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। ভোক্তাদের উচিত ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে ব্যক্তিগত কোনো তথ্য দেওয়ার সময় কোথায় দেওয়া হচ্ছে এবং সেখানে তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে কি না সেটি খেয়াল রাখা। 

তথ্য সুরক্ষা সপ্তাহ

‘তথ্য সুরক্ষা সপ্তাহ’ মূলত ২০২১ সাল থেকে ‘তথ্য সুরক্ষা দিবস’(২৮ জানুয়ারি)-এর সম্প্রসারিত প্রচেষ্টা। এই কর্মসূচি মূলত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের মাঝে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার সর্বোত্তম কলাকৌশল ভাগাভাগি করার সুযোগ করে দেয়। এই কর্মসূচিতে দুটো দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে: প্রথমত- নিজের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবস্থাপনা করার সক্ষমতা নাগরিকদের রয়েছে, এটি তাদের বোঝানো। এবং দ্বিতীয়ত- বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই গুরুত্ব বোঝানো যে কেন গ্রাহক বা ভোক্তার তথ্যের সুরক্ষার প্রতি তারা যত্নশীল হওয়া উচিত।

১৯৮১ সালে ইউরোপের বৃহৎ সংগঠন ‘কাউন্সিল অব ইউরোপে’ কনভেনশন ১০৮ স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে বিশ্বে প্রথম তথ্য সুরক্ষা দিবসের (২৮ জানুয়ারি) সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান শুরু হয়। ‘কনভেনশন ১০৮’ নাগরিকের তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি যা প্রতিপালনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এজেড