images

তথ্য-প্রযুক্তি

আপনার ওয়াইফাই গোপনে কেউ ব্যবহার করছে কি না যেভাবে বুঝবেন

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৮ পিএম

অনেকেই মনে করেন, ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার সময় যে পাসওয়ার্ড সেট করা হয়েছিল, সেটাই ওয়াই-ফাইকে নিরাপদ রাখার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, একবার সেটআপ করার পর অধিকাংশ ব্যবহারকারী আর রাউটারের সেটিংসে ঢোকেন না। এই অবহেলার সুযোগ নিয়েই প্রতিবেশী বা আশপাশের কেউ গোপনে আপনার ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে পারে। এর ফলে ইন্টারনেটের গতি কমে যায়, ডেটা দ্রুত শেষ হয় এবং কখনও কখনও আইপি অ্যাড্রেসের অপব্যবহারও হতে পারে। ভালো খবর হলো—এই সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধান করতে সময় লাগে মাত্র কয়েক মিনিট।

ডিফল্ট রাউটার সেটিংস কেন বড় বিপদসঙ্কেত

ওয়াই-ফাই চুরি হওয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো রাউটারের ডিফল্ট সেটিংস অপরিবর্তিত রাখা। অধিকাংশ রাউটার admin বা password-এর মতো সহজ অ্যাডমিন ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড নিয়ে আসে। অনেকেই এগুলো পরিবর্তন করেন না। ফলে যে কেউ অনলাইনে রাউটারের মডেল সার্চ করে খুব সহজেই এই তথ্য জেনে নিতে পারে এবং নেটওয়ার্কে ঢুকে পড়তে পারে।

আপনার ওয়াই-ফাই কেউ ব্যবহার করছে কি না যেভাবে বুঝবেন

এটি জানতে প্রথমে নিজের ব্রাউজার খুলে 192.168.1.1 অথবা 192.168.0.1 টাইপ করতে হবে। এরপর রাউটারের ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে Connected Devices, Device List বা Attached Devices অপশনে যেতে হবে। সেখানে যদি এমন কোনো ডিভাইসের নাম বা ম্যাক অ্যাড্রেস দেখা যায়, যা আপনি চিনতে পারছেন না, তাহলে বুঝতে হবে—আপনার ওয়াই-ফাই অন্য কেউ ব্যবহার করছে।

resize

অ্যাডমিন পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা কেন সবচেয়ে জরুরি

অনেকে শুধু ওয়াই-ফাই পাসওয়ার্ড বদলান, কিন্তু রাউটারের অ্যাডমিন পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করেন না। অথচ এই অ্যাডমিন পাসওয়ার্ড দিয়েই রাউটারের সব সেটিংস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যদি এটি দুর্বল বা ডিফল্ট অবস্থায় থাকে, তাহলে যে কেউ সহজেই নেটওয়ার্কের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। তাই রাউটার সেটিংসে ঢুকে দ্রুত একটি শক্তিশালী ও ইউনিক অ্যাডমিন পাসওয়ার্ড সেট করা জরুরি।

সঠিক ওয়াই-ফাই সিকিউরিটি মোড ব্যবহার করছেন তো?

আপনার রাউটারের সিকিউরিটি যদি এখনও WEP বা WPA মোডে থাকে, তাহলে সেটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই সিকিউরিটি ব্যবস্থা কয়েক মিনিটের মধ্যেই হ্যাক করা সম্ভব। রাউটার সমর্থন করলে অবশ্যই WPA2-PSK (AES) বা সর্বোত্তমভাবে WPA3 সিকিউরিটি মোড ব্যবহার করা উচিত। ওয়াই-ফাই সুরক্ষার ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপগুলোর একটি।

আরও পড়ুন: কল ড্রপ ও স্লো ইন্টারনেটের পেছনে দায়ী কি ফোন কভার? জানুন আসল কারণ

WPS বন্ধ রাখাই নিরাপদ

WPS (Wi-Fi Protected Setup) সুবিধাটি ডিভাইস সংযোগ সহজ করলেও এটি বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে। ফ্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই WPS PIN ভেঙে ফেলা সম্ভব। তাই রাউটারের সেটিংসে গিয়ে WPS সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

Academy-Understanding-Wi-Fi-6-What-Is-It-and-Do-You-Need-to-Upgrade-Thumb

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ও SSID লুকিয়ে রাখা

ওয়াই-ফাই পাসওয়ার্ড অন্তত ১৬ অক্ষরের হওয়া উচিত এবং এতে বড় হাতের অক্ষর, ছোট হাতের অক্ষর, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করা দরকার। নিজের নাম, ফোন নম্বর বা সহজ শব্দ ব্যবহার করা এড়িয়ে চলাই ভালো। চাইলে রাউটারের সেটিংস থেকে SSID ব্রডকাস্ট বন্ধ করে নেটওয়ার্কের নাম লুকিয়ে রাখা যেতে পারে, এতে অচেনা ব্যবহারকারীরা সহজে নেটওয়ার্ক খুঁজে পাবে না।

ম্যাক ফিল্টারিং ও ফার্মওয়্যার আপডেটের গুরুত্ব

ম্যাক অ্যাড্রেস ফিল্টারিং চালু করলে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ডিভাইসগুলোই আপনার ওয়াই-ফাইয়ে সংযোগ করতে পারবে। কেউ পাসওয়ার্ড জেনেও অনুমতি ছাড়া নেটওয়ার্কে ঢুকতে পারবে না। পাশাপাশি নিয়মিত রাউটারের ফার্মওয়্যার আপডেট রাখা জরুরি, কারণ পুরনো ফার্মওয়্যারে নিরাপত্তা ত্রুটি থাকে। আপডেটেড ফার্মওয়্যার ওয়াই-ফাইকে আরও নিরাপদ ও স্থিতিশীল করে।

এজেড