তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১২ পিএম
মোবাইলে আসা একটি এসএমএসই মুহূর্তের মধ্যে সর্বস্ব খোয়ানোর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে প্রতারকরাও আরও কৌশলী হচ্ছে। ব্যাংক, বিদ্যুৎ অফিস কিংবা সরকারি সংস্থার নামে পাঠানো প্রতারণামূলক এসএমএস এখন বাংলাদেশেও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। তবে কিছু ছোট লক্ষণ খেয়াল রাখলেই এই ধরনের প্রতারণা সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব।
বানান ও ভাষার ভুল থেকেই ধরা পড়ে ফাঁদ
প্রতারণামূলক এসএমএসের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো ভাষাগত অসংগতি। অনেক সময় মেসেজে ভুল বানান, অপ্রাসঙ্গিক শব্দ বা অস্বাভাবিক বাক্য গঠন দেখা যায়। সরকারি দফতর ব্যাংকের পাঠানো এসএমএস সাধারণত প্রমিত ভাষায় এবং নির্ভুলভাবে লেখা হয়। তাই মেসেজে বানান ভুল বা অদ্ভুত ভাষা দেখলে সেটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন।
প্রেরকের নম্বর যাচাই করা জরুরি
বাংলাদেশে ব্যাংক ও সরকারি সংস্থা সাধারণত নির্দিষ্ট শর্ট কোড বা পরিচিত হেডার থেকে এসএমএস পাঠায়। যদি কোনও সাধারণ মোবাইল নম্বর থেকে ব্যাংক বা বিদ্যুৎ অফিসের পরিচয়ে মেসেজ আসে, তাহলে সেটি প্রতারণামূলক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সন্দেহ হলে ওই নম্বর থেকে আসা মেসেজে কখনওই সাড়া দেওয়া উচিত নয়।
লিংক থাকলে আরও সতর্ক হোন
প্রতারণামূলক এসএমএসে প্রায়ই একটি লিংক থাকে। বলা হয় বিল আপডেট, অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন বা জরুরি কোনও কাজ বাকি আছে। যাচাই না করে এই ধরনের লিংকেঙ্কে ক্লিক করলে ফোনে ম্যালওয়্যার ঢুকে পড়তে পারে বা ভুয়া ওয়েবসাইটে তথ্য দিতে বাধ্য করা হতে পারে। বিশেষ করে অল্প সময়ের মধ্যে কাজ না করলে লাইন কেটে দেওয়া হবে বা অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে এমন বার্তা থাকলে সেটিকে সতর্ক সংকেত হিসেবে ধরতে হবে।
ব্যক্তিগত তথ্য চাইলে বুঝে নিন প্রতারণা
কোনও এসএমএসে যদি ওটিপি, পিন নম্বর, কার্ডের তথ্য বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়, তাহলে সেটি নিশ্চিতভাবে প্রতারণামূলক। বাংলাদেশে কোনও ব্যাংক বা সরকারি সংস্থা কখনও এসএমএসের মাধ্যমে এই ধরনের সংবেদনশীল তথ্য চায় না।

বাংলাদেশে প্রচলিত প্রতারণার কৌশল
সাম্প্রতিক সময়ে অনেক গ্রাহক জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিল বা মোবাইল বিল আপডেট হয়নি বলে ফোন ও এসএমএস করা হচ্ছে। কখনও অ্যাপ ইন্সটল করতে বলা হচ্ছে, আবার কখনও হোয়াটসঅ্যাপ লিংক পাঠিয়ে দ্রুত ক্লিক করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। ভয় দেখিয়ে তাড়াহুড়া করাই এসব প্রতারণামূলক এসএমএসের মূল কৌশল।
বারবার একই মেসেজ এলে সাবধান
একই ধরনের বার্তা বারবার আসা বা বিভিন্ন নম্বর থেকে একই এসএমএস পাওয়া প্রতারণার স্পষ্ট লক্ষণ। কোনও প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে মেসেজ এলে সেই প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা গ্রাহকসেবা নম্বরে নিজে যোগাযোগ করে তথ্য যাচাই করা সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।
আরও পড়ুন: ফোনে প্রমোশনাল এসএমএস আসা বন্ধ করার উপায়
কী করলেই নিরাপদ থাকবেন
কোনও এসএমএস নিয়ে সামান্য সন্দেহ হলেও সেটি উপেক্ষা করা উচিত। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, বিদ্যুৎ অফিস বা পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে সত্যতা যাচাই করুন। সচেতন থাকলেই প্রতারণামূলক এসএমএস থেকে নিজেকে ও নিজের অর্থকে নিরাপদ রাখা সম্ভব।
এজেড